চাটমোহর থেকে শামীম হাসান মিলন : শীত আসছে। প্রকৃতি জুড়ে শীতের আবহ। গ্রামবাংলায় শীতের প্রধান অনুষঙ্গ সুস্বাদু খেজুরের রস। সেই রসে পাটালি গুড় আর শীতের রকমারী পিঠাপুলি।

খেজুর রসের যোগান দিতে এখন থেকেই ব্যস্ত গাছিরা। চলছে খেজুর গাছ চাঁছা-ছোঁলার কাজ।


চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের আগশুয়াইল গ্রামটি গাছিদের গ্রাম হিসাবে এখনো পরিচিত। এখনো গ্রামটিতে রয়েছে প্রচুরসংখ্যক খেজুর গাছ।

মৌসুমের শুরুতেই বাজারে পাটালি গুড় ও পয়লাকাঠির খেজুর রস ওঠে এই আগশুয়াইল গ্রামের গাছিদের আগাম গাছ ঝোড়ার কারণে।


গ্রামটিতে গিয়ে দেখা যায়, কোমরে মোটা রশি বেঁধে ঝুলে ঝুলে খেজুর গাছ ঝুড়ে মাথায় চাঁছ দিচ্ছেন। এ গ্রামের পেশাদার গাছিদের পাশাপাশি গৃহস্থরাও বসে নেই, নিজের গাছ তৈরী করছেন তারা।

কথা হয় এই গ্রামের আব্দুল মান্নান নামের এক গাছির সাথে। তিনি জানান, আশ্বিন মাসের শুরু থেকেই খেজুর গাছের পরিচর্যা চলছে। গাছের বাইগা (ডাল) ঝোড়া, গাছের মাথা ছেনি অথবা ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে কয়েক দফা চাঁছ দেওয়ার কাজ চলছে। রস জ্বালানো ভাটি, জ্বালানী ও রসের খুঁটি সংগ্রহের কাজ শেষের দিকে।

আরেক গাছি ঠান্টু মিয়া বলেন, এই গ্রামের খেজুর রস ও পাটালির সুনাম আছে। তাই আমরা আগাম কাজ করি। দেশের বিভিন্ন এলাকায় এখানকার গুড় বিক্রি হয় বলে তিনি জানান।

উপজেলার গ্রামীণ মেঠোপথের ধারেই রয়েছে সারিসারি খেজুর গাছ। তাই এ আশ্বিনের বিকেলটায় গ্রামের যে পথেই হাঁটা যায়, চোখে পড়বে খেজুর গাছ ঝোড়ার অপূর্ব দৃশ্যটি।

আর কিছুদিন পরেই গ্রামের ঘরে ঘরে খেজুর রস আর গুড় দিয়ে নতুন আমন ধানের পিঠাপুলি ও পায়েশ তৈরির ধুম পড়বে। আসন্ন নবান্নতেও এই খেজুর গুড় ও রস নতুন মাত্রা আনবে গ্রামের গৃহস্থদের রসুইখানায়।

(এসএইচএম/এএস/নভেম্বর ০২, ২০১৪)