স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যশোর : যশোরের মনিরামপুরে এক যুবককে অপহরণ করে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। এ ঘটনায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বর থেকে তথ্য পেয়ে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৩ টার দিকে পুলিশ অপহরণের শিকার ওই যুবককে উদ্ধার করেছে। উদ্ধার যুবকের নাম মোহাম্মদ সাজিদ (৪০)। তিনি ঢাকার কেরানিগঞ্জের কাজী মাহমুদুল হাসানের ছেলে।

এই ঘটনায় বুধবার দুপুরে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সাজিদ বাদী হয়ে আশিকুর রহমান আশিকসহ অজ্ঞাত দুই-তিন জনের নামে মণিরামপুর থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ অভিযুক্ত আশিকুর রহমান আশিককে গ্রেফতার করেছে। আশিকের বাড়ি উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নে। তিনি গত দুই বছর ধরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানমের ব্যক্তিগত সহকারী হিসাবে কাজ করেন ও নাজমা খানমের বাড়ির পাশে একটি ঘর ভাড়া করে সেখানে তিনি বসাবস করে আসছেন।

ঢাকার ব্যবসায়ী কাজল বিশ্বাস বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনশক্তি সরবরাহ করা আমার কাজ। মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউট সোর্সিং-এ আমার ১১ জন লোক নিয়োগ দেওয়া আছে। সাজিদ আমার অফিসের কর্মচারী। মণিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োগ ১১ জনের বেতন সংক্রান্ত কাজে সাজিদ সোমবার বিকেলে মণিরামপুর হাসপাতালে যান। সেখান থেকে দুই জন ব্যক্তি একটি নম্বর থেকে সাজিদকে কল করে মণিরামপুর দোলখোলা মন্দিরের পাশে নিয়ে যান। এরপর তারা একটি মোটরসাইকেলে করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সাজিদকে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে সাজিদের নম্বরে আমার সাথে কথা বলে আশিক নিজেকে জুবায়ের পরিচয় দিয়ে আমার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না পেয়ে রাতে উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানমের বাড়ির পাশে সাজিদকে একটি ঘরে আটকে রাখে আশিকসহ এক ব্যক্তি।

কাজল বিশ্বাস বলেন, রাত ৩ টার দিকে সাজিদকে উদ্ধারে ৯৯৯ নম্বরে কল করে সহায়তা চাইলে মণিরামপুর থানা পুলিশ নাজমা খানমের বাড়ির পাশ থেকে সাজিদকে উদ্ধার করে। এ সময় আশিককে আটক করে পুলিশ। পরে নাজমা খানম এসে আশিককে হেফাজতে নিয়ে আমার লোককে পুলিশের জিম্মায় দিয়ে দেন। আজ দুপুরে মামলা হওয়ার পর পুলিশ আশিককে গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতার আশিকুর রহমান আশিক বলেন, সাজিদ যাদের নিয়ন্ত্রণে কাজ করে এদের মাধ্যমে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আমার এক জনের কাজ হয়েছে। পরে আমার আরএক লোককে চাকরি দেওয়ার কথা ছিল। নিয়োগ সংক্রান্ত টাকা পয়সার লেনদেন নিয়ে আমি সাজিদকে ধরেছি। তবে ব্যবসায়ী কাজল বিশ্বাস বলেন, আশিককে আমি চিনি না। লোক নিয়োগ সক্রান্ত কোন বিষয়ে তার সাথে আমার কখনো কথা হয়নি।

মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম বলেন, আশিককে আমি সহযোগী হিসেবে বেতন দিয়ে রেখেছি। কয়েকদিন ধরে সে আমার বাড়ির পাশে ঘর ভাড়া করে থাকে। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ ওদের দুই জনকে ধরে আমার কাছে নিয়ে আসে। আমি সবকিছু শুনে তখন আশিককে হেফাজতে রেখে দিই। পরে পুলিশ আশিককে গ্রেফতার করেছে।

নাজমা খানম বলেন, কাউকে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবির বিষয়ে আমি কিছু জানি না।

মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে আমরা যুবককে উদ্ধার করেছি। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

(এসএমএ/এএস/সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩)