ইন্দ্রজিৎ সাহা, কালিয়াকৈর : গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপলোর বোয়ালী এলাকায় মাছের খামার করে রাস্তা নষ্ট করায় যান ও জনগণের চলাচলে চরম দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। এতে শুধু রাস্তার ক্ষতিই নয়, সরকারের বরাদ্ধের লাখ লাখ টাকা গচ্চা যাচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। 

উপজেলার বোয়ালী, মধ্যপাড়া, চাপাইর, ফুলবাড়িয়া, শ্রীফলতলী, মৌচাক, সুত্রাপুরসহ সাতটি ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার কাঁচা ও ব্রিক সলিং এবং পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে রাস্তার বেশী ক্ষতি হচ্ছে। অনেকে আবার জানিয়েছেন, এসব রাস্তা করার সময় ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের যোগসাজসে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারনে কিছুদিন যেতে না যেতে প্রতিনিয়ত এমনি ভাবে রাস্তার ক্ষতি হচ্ছে। এসব রাস্তার কাজে সংশ্লিষ্টদের অনিয়মের কারনে, ক্ষতি গ্রস্থ রাস্তা মেরামতের জন্য সরকারে কোষাগার থেকে প্রচুর টাকাও বরাদ্ধ দেয়া হচ্ছে। একদিকে নষ্ট রাস্তা মেরামত করা হচ্ছে। আবার বছর পার না হতেই আবারও পুরানো আকার ধারন করছে রাস্তা। এতে সরকারের টাকা যেমন নষ্ট হচ্ছে।

অপরদিকে সরকারের উন্নয়নের চিত্রকে ম্লান করে দিচ্ছে। বৃহস্পতিার সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, চাবাগান থেকে রঘুনাথপুর ব্রিক সলিং রাস্তার দুই পাশে বড় বড় মাছের খামার রয়েছে। খামারে অতিরিক্ত পানি রাখায় ওই পানি রাস্তার উপর উঠে খানাখন্দ সৃষ্টিসহ রাস্তার মাটি দেবে গিয়ে, যানবাহন ও জনগনের চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। রাস্তার আশপাশের লোকজন জানায়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী আলহাজ্ব এ্যাডঃ আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি সরকারী ভাবে রাস্তা উচু করে ডাবল ইটা (এইচবিবি) দিয়ে রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করে দিয়ে ছিলেন। রাস্তা নির্মানের বছর পার না হতেই মাছ চাষীরা খামারের পানি দিয়ে রাস্তা নষ্ট করে ফেলেছে। মাছ চাষীরা তাদের খামারে যে পরিমান পানি রাখার কথা তার চেয়ে বেশী পানি রেখে রাস্তার উপর উঠিয়ে রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে। এতে ওই এলাকার কয়েকটি গ্রামের লোকজন ও রঘুনাথপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা ওই রাস্তা দিয়ে অনেক ভোগান্তি নিয়ে স্কুলে যাওয়া আসা করে।

ভুক্তভোগীরা জানান, আমাদের মন্ত্রী মহোদয় দিন রাত পরিশ্রম করে একদিকে এলাকার বিভিন্ন রাস্তার উন্নয়ন করে যাচ্ছে অপর দিকে মাছ চাষীরা তাদের খামারে অতিরিক্ত পানি রেখে রাস্তার ক্ষতি করে যাচ্ছে। এতে সরকারের বিপুল পরিমান টাকা ক্ষতি হচ্ছে। এগুলো দেখার যেন কেও নেই।

স্থানীয় এলাকাবাসী আরো জানান, মৎস্য খামারের কারনে রাস্তা নষ্টের বিষয়টির পাশাপাশি উপজেলার চলমান সকল রাস্তার কাজে যেন সিডিউল অনুযায়ী ঠিকাদার কাজ করে সে দিকে প্রশাসনের খেয়াল রাখতে হবে। রাস্তার কাজে যেন কোন নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার না করা হয়। এছাড়া রাস্তার উভয় পাশে যে সকল মাছের খামার রয়েছে সেই সব খামারের পানি কমিয়ে রাস্তার যাতে ক্ষতি না হয় সেই ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোড় দাবী জানিয়েছেন ভোক্তভোগী এলাকাবাসী।

এছাড়াও এলাকার সুধীজনেরা জানিয়েছেন, রাস্তার কিনারা থেকে চার ফিট পরে গিয়ে মাটির তিন ফিট গভীর থেকে দশ থেকে পনের ইঞ্চি প্রসস্থ্য করে গাইড ওয়াল করে দিলে মৎস্য খামারের কারনে আর রাস্তার নষ্ঠ হবে না। আর যারা খামারে অতিরিক্ত পানি রেখে ওই পানি রাস্তার উপর উঠিয়ে রাস্তা নষ্ঠ করবে তাদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানাসহ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, মাছের খামার করে যারা সরকারী রাস্তা নষ্ট করছে সরেজমিনে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

(আইএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩)