শেরপুর প্রতিনিধি : ‘আমি মুক্তিযুদ্ধে যাবার চাইছিলাম। কিন্তু কামারুজ্জামান আমার জীবনডারে ধ্বংস কইরা দিছে। ওই আমারে ধইরা নিয়া আলবদর ক্যাম্পের পাহারাদার বানাইছে। আমি ওর শেষ দেকপার চাই। কামরুজ্জামানের ফাঁসি দেইক্কা মরবার চাই।’ আপিলে কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় বহাল থাকার সংবাদে এভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া জানালেন আলবদর কমান্ডার কামারুজ্জামানের এক সময়ের সহচর আত্মস্বীকৃত আলবদর মোহন মিয়া ওরফে মহন মুন্সী।

তিনি ছিলেন শহরের নয়ানী বাজার আলবদর টর্চার ক্যাম্পের পাহারাদার। তিনি বলেন, সুরেনসার বাসায় কতো মাইনসেরে যে ধইরা নিয়া নির্যাতন করা হইছে আমি তার সাক্ষী। আমার চক্কের সামনে সব ঘটছে। কামারুজ্জামানের নির্দেশে ধইরা আইন্না নির্যাতনের পর অনেককে হত্যা করা হয়েছে। সময় সময় কামারুজ্জামান আইসা অর্ডার দিতো, কখনো খারাই থাইক্কা মারাইতো। আর দোতায়ায় চলতো মওজ-স্ফুর্তি। খরখড়িয়ার গোলাম মোস্তফারে কামারুজ্জামানেই মারাইছে।

শহরের বাগরাকসা এলাকার বাসিন্দা আলবদর মহন মুন্সী কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন। নানা অসুখ-বিসুখে আকান্ত মহন মুন্সী আক্ষেপ করে বলেন, কামারুজ্জামান আমার জীবনডারে শেষ করা দিছে। মাইনষে দেখলে আমারে ‘বদর’ কইয়া, ‘রেজাকার’ কইয়া গাইল (গালি) দেয়। তিনি বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার জন্য মুজাহদ ট্রেনিং দিয়েছিলাম, কিন্তু ওই আমারে জোর কইরা ধইরা বদর বানাইছে। বদর ক্যাম্পের পাহারাদার করছে। জীবনের ভয়ে তখন কিছুই কবার পাই নাই। যহন সুযোগ অইছে, তখন ওর বিচার দাবি করছি।

মহন মুন্সী বলেন, সাক্ষী দেওয়ার পর কামারুজ্জামানের লোকজন আমারে নানা ভয়ভীতি দেখায়া চলছে। আমারে পাইলে ওরা শেষ কইরা দিবো, ইমুন হুমকিও দেয়। নানা জনের কাছে নানা কথা কয়। কিন্তু আল্লায় আছে। যা সত্য তাই কইছি। তিনি বলেন, কামারুজ্জামান আমার জীবন শেষ করছে, আমি ওর জীবনের শেষ দেকপার চাই। আল্লার কাছে কই, ওর ফাঁসিডা না দেইক্কা যেন আমার মরণ না দেয়।

(এইচবি/এএস/নভেম্বর ০৩, ২০১৪)