নীহার রঞ্জন কুন্ডু, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে রাজাকার সন্তান, বহিষ্কৃত, বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীদের  পদ দেওয়ায় অবস্থান ধর্মঘট ‌পালন করেছে পদবঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধা ও নেতাকর্মীরা। 

আজ মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর প্রেসক্লাবের সামনে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী এ অবস্থান ধর্মঘট পালন করে তারা।

এ সময় পদবঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি হানাদার ও রাজাকার আল বদরদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ করে ত্রিশ লাখ মানুষের জীবন ও দুই লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে দেশকে স্বাধীন করেছি। কিন্তু আজ স্বাধীন দেশে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেওয়া দল আওয়ামীলীগ।

বীর মুক্তিযোদ্ধারা আরোও জানান, ১৯৭১ সালে ওবায়দুল আনোয়ার বুলবুলের নানা আনিছুর রহমান মুর্শিদাবাদী ও থানা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। মামা সুবাইলি গফরগাঁও ব্রহ্মপুত্র লঞ্চঘাটা বধ্যভূমি হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা ছিলেন এবং বাবা মাওলানা আব্দুল বাতেন ছিলেন গফরগাঁও থানা শান্তি কমিটির সাধারণ সম্পাদক। কায়সার আহমেদের বাবা আমিনুল হক চাঁন মিয়া ছিলেন গফরগাঁও উপজেলার কুখ্যাত রাজাকার। ড. আবুল হোসেন দিপুর বাবা আব্দুর রশিদ ছিলেন টাঙ্গাব ইউনিয়নের কুখ্যাত রাজাকার এবং ড. আবুল হোসেন দিপুর বিরুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা পল্লী চিকিৎসক দুলাল হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা জানান, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগে আগে যারা কখনও রাজনীতি করে নাই, এখন তাদেরকেই জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বড় বড় পদ দেয়া হয়েছে।

ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক প্রস্তাবিত কমিটি থেকে ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা অনৈতিকভাবে ২৬ জন সদস্যকে বাদ দিয়ে ১৬ জন বিতর্কিত ব্যক্তিকে জেলা কমিটিতে অর্ন্তভূক্ত করে কমিটি প্রকাশ করে।

এ সময় অবস্থান ধর্মঘটে বক্তব্য রাখেন- উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন মনি, জেলা শ্রমিকলীগ নেতা রাকিবুল ইসলাম শাহীন, সাবেক ছাত্রনেতা ও শহর আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান খানের ছেলে জাহাঙ্গীর খান, সাবেক ছাত্রনেতা ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ রানা, সাবেক ছাত্রনেতা প্রদীপ ভৌমিক, সাবেক নেতা রফিকুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, সাবেক ছাত্রনেতা মঞ্জুর মোর্শেদ রাজু, ছাত্রনেতা আতাউর রহমান টিটু, সাবেক ছাত্রনেতা রেজাউল আলম ভুলু, সাবেক ছাত্রনেতা ও আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য আরিফুল হক লিটন, সাবেক ছাত্রনেতা রাহাত হোসেন টিটু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য এড. ফারামার্জ নূর রাজিব, সাবেক ছাত্রনেতা ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মিনার হোসেনসহ পদবঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধা ও নেতাকর্মীরা।

‌(এনআরকে/এসপি/অক্টোবর ০৩, ২০২৩)