মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বালিদিয়া গ্রামে সামাজিক দলের  দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে নতুন করে প্রতিপক্ষের অগ্নিসংযোগে ১৭টি বসতবাড়ি-দোকান ও পাঁচটি পাটকাঠির গাঁদা সম্পূর্ণ ভষ্মীভূত হয়েছে। এ সময় ২০টি বসতঘর ও দোকানপাটে হামলা-ভাংচুর ও লুট করা হয়। সোমবার সকালের সংঘর্ষের জের ধরে ওই দিন রাত ৮ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিস অফিস সূত্রে জানা গেছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এলাকায় আধিপত্যে বিস্তার নিয়ে সামাজিক দলনেতা বালিদিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান মিনা ও একই গ্রামের অপর সামাজিক দলনেতা ইউনুস সিকদারের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। সোমবার সকালে উভয় নেতার সমর্থক নাসির মোল্যা ও মহর মোল্যা একটি বিরোধপূর্ণ জমি চাষ নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় দেশী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে উভয় পক্ষ একে অপরের উপর হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষের ২০টি বসতঘর ও ৪টি ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। ওই সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ৮০ রাউ- শর্টগানের গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পুলিশ ।

এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ওই দিন রাতে মফিজুর রহমান গ্রুপের আহম্মদ শিকদারের ছেলে জসিম (১১) বালিদিয়া হাটে বাজার করতে গেলে ইউনুস গ্রুপের মন্নু সিকদার তাকে গরম লোহার রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় স্যাঁকা দেয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে উভয় গ্রুপের সমর্থকেরা দেশি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পুনরায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

সংঘর্ষ চলাকালে কাঞ্চন মোল্যার ২টি,আকুব্বর মোল্যার ২টি,হাফিজার মোল্যার ৩টি বসত ঘর ,কামাল ১টি রাইস মিল ১ টি দোকান মোল্যার, কামাল মোল্য, জিল্লু সর্দার, পান্নু সর্দার, মন্নু সর্দার, আমিরুল সর্দার, সামাদ মোল্যা ও আলম মোল্যার দোকানঘর সম্পূর্ন আগুনে ভষ্মীভূত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে অন্তত ১৭টি বসতবাড়ি ও দোকানে হামলা চালিয়ে অগ্নি সংযোগ, ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়।

আগুনে জিল্লু সর্দার,নবীর মোল্যা ও কাঞ্চন মোল্যার পাটকাঠির গাঁদা আগুনে পুড়ে যায়। প্রায় আড়াই ঘন্টা আগুন জ্বলার পর মাগুরা থেকে দমকল কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

মাগুরা ফায়ার সার্ভিস অফিসার মনিরুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মতিয়ার রহমান জানান ‘ ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, সহকারি পুলিশ সুপার সুদর্শন রায়, মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

(ডিসি/এএস/নভেম্বর ০৪, ২০১৪)