নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের বড়াইগ্রামে একজন সিনিয়র সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফেসবুক পেইজে মিথ্যা ও মানহানিকর অপপ্রচার করার অভিযোগে ফেসবুকার মঞ্জুরুল হক সুজন (৩৫)-এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগী বড়াইগ্রাম কেন্দ্রীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশন-নাটোর জেলা আহ্বায়ক অমর ডি কস্তা ও ভুক্তভোগী এক কিশোরীর মা মিনু বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় এই মামলা দায়ের করেন। মঞ্জুরুল হক সুজন উপজেলার কায়েমকোলা গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে। 

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, একটি ফেইক ফেসবুক আইডি ও এর সাথে জড়িত সন্দেহে এক কিশোরী এবং তার চক্রের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর যৌন অপরাধ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ করেন সিনিয়র সাংবাদিক অমর ডি কস্তা। এরই সুত্র ধরে মঞ্জুরুল হক সুজন নামে একজন ফেসবুকার ওই কিশোরীকে ভুল বুঝিয়ে ও কিশোরীর মধ্যে ভীতিকর মানসিক অবস্থা তৈরি করে শেখানো একটি ভিডিও সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে। বৃহস্পতিবার রাতে ওই ভিডিও ফেসবুকার মঞ্জুরুল হক সুজন তার নিজস্ব ফেসবুক পেইজ ’নাগরিক ভাবনা’ ও ‘নাটোর লাইফ’ পোস্ট করেন। বিষয়টি জানতে পেরে বড়াইগ্রাম কেন্দ্রীয় প্রেসক্লাবের ২০ জন সাংবাদিক ওই কিশোরীর বাড়িতে ঘটনার আড়ালের ঘটনা জানতে যায়।

এসময় ওই কিশোরী জানায়, মঞ্জুরুল হক সুজন নিজেকে বড় সাংবাদিক পরিচয় দেয় এবং তাকে থানা থেকে পাঠিয়েছে বলে জানায়। সুজন তাকে বলেন, ”তোমার ও তোমার মায়ের বিরুদ্ধে নিউজ হয়েছে ও তা ভাইরাল হয়েছে। থানা পুলিশ, ডিবি ও সিআইডি এগুলো নিয়ে কাজ করছে। তোমাকে ও তোমার মা’কে এ বিপদ থেকে উদ্ধার করতে থানা পুলিশ আমাকে পাঠিয়েছে। তোমাকে যা যা বলতে বলি তা তা ক্যামেরার সামনে বলো। এতে তুমি ও তোমরা বাঁচতে পারবে। নাইলে সারা জীবন জেলে কাটাতে হবে।”

এ সময় ওই কথিত সাংবাদিক সুজন তাকে আরও বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে নানাভাবে ভুল বুঝায়। এতে তার মধ্যে মানসিক ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়। পরে ওই কিশোরী কথিত সাংবাদিক সুজনের শেখানো মতে ক্যামেরার সামনে সিনিয়র সাংবাদিক অমর ডি কস্তা’র বিরুদ্ধে মিথ্যা, সাজানো ও আপত্তিকর কথা বলেন যা ভিডিও ধারণ করে তার দুইটি ফেসবুক পেইজে পোস্ট করেন।

‘নাটোর সমাচার’ এর এডমিন ও মানবাধিকার কর্মী সাংবাদিক বিএম রতন আলী জানান, সাংবাদিক অমর ডি কস্তা একজন সুপরিচিত বিশিষ্ট নাগরিক। তার বিরুদ্ধে একজন কিশোরী কি বলছেন তা দেখতে ওই পেইজ লিংকে ক্লিক করবে হাজার হাজার জনগণ। এতে তার ভিউ বাড়বে ও ডলার আয় হবে। এটা উদ্দেশ্য প্রণেদিত এবং একই সাথে বড় ধরণের ক্রাইম। ভিউ বাড়ানো ও ডলার আয়ের জন্য ওই ফেসবুকার নোংরা পথ বেছে নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী।

বড়াইগ্রাম কেন্দ্রীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পিকেএম আব্দুল বারী জানান, তার ফেসবুক পেইজের জন্য অন্যায়ভাবে কোন ব্যক্তিকে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে না। ওই কথিত সাংবাদিকের কাজই হলো বিভিন্ন তরুণী ও কিশোরীর ভিডিও ধারণ করে নোংরা ভাবে কন্টেন্ট তৈরি করা এবং সেগুলো তার পেইজে পোস্ট দেওয়া। এতে ভুক্তভোগীরা এসব ভিডিও মুছে দেওয়ার কথা বললে সে টাকা দাবি করে এবং তার দাবিকৃত টাকা পাওয়ার পর সেগুলো মুছে ফেলে। বর্তমানে এটাই তার আয়ের উৎস।

বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সিদ্দিক জানান, ফেসবুকার মঞ্জুরুল হক সুজনের সকল কর্মকান্ড পুলিশ খতিয়ে দেখছে এবং তদন্তপূর্বক আইনগত সকল ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

(এডিকে/এসপি/অক্টোবর ১৩, ২০২৩)