হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জে র‌্যাবের নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ ও স্মারক লিপি প্রদান করেছে কেন্দ্রীয় মহররম উদযাপন কমিটি। বুধবার দুপুরে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ থেকে কয়েক হাজার জনতার বিক্ষোভ মিছিলটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। এসময় কেন্দ্রীয় মহররম উদযাপন কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল, মহিবুল ইসলাম শাহীন, মাহবুবুর রহমান হিরো, আইনজীবী মইনুল ইসলাম দুলাল, ইউপি সদস্য মাহমুদ হাসান, আইয়ূব আলী, ফিরোজ আলী, আজগর আলী, তৈয়ব আলী, জহুর আলী প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২শ বছর যাবত সুলতানশী এলাকার ৪টি গ্রামের ৫০ হাজার লোক ১০ মহররম পালন করে থাকে। এবছর তাজিয়া রাখা নিয়ে তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষ ঘটে। র‌্যাবকে এই সংঘর্ষ থামাতে অনুরোধ করলে শরীফপুর গ্রামের গ্রামের মৃত রফিক উল্লাহর ছেলে সাংবাদিক দ্বীন ইসলামকে বেধড়ক মারধোর করে মামলা দিয়ে থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব। নিরপরাধ দ্বীন ইসলামকে অবিলম্বে মুক্তি না দিলে এবং র‌্যাবের দোষী কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে রাজপথ অবরোধসহ কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। পরে জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শফিউল আলমের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এসময় তিনি উপস্থিত সবার অনুভূতির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে সবাইকে শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ জানান এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলার সুলতানশী এলাকায় তাজিয়া রাখা নিয়ে সদর উপজেলার হাতিরথান গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে বাহুবল উপজেলার কাজীহাটা গ্রামের অপর এক যুবকের কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে সন্ধ্যার পর কটিয়াদী বাজারে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে র‌্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্প সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসে।

এসময় স্থানীয় দৈনিক বিজয়ের প্রতিধ্বনী পত্রিকার সাংবাদিক দ্বীন ইসলাম সংঘর্ষ থামাতে র‌্যাব সদস্যদের কাছে অনুরোধ জানান। কিন্তু র‌্যাব সদস্যরা উল্টো দ্বীন ইসলামকে মারধর করে। ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমদুল হক, বাহুবল উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই ও লস্করপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী আমজাদসহ অনেকে। তাদের সামনেই র‌্যাব তাকে আটক করে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায়। রাত ১০টায় গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হবিগঞ্জ সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশ দ্বীন ইসলামকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করে। আজ বুধবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

দ্বীন ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, কোনো অপরাধ না করার পরও র‌্যাব তাকে শত শত লোকের সামনে পিটিয়েছে। শুধু তাই নয়, র‌্যাব তাকে আটক করে গাড়িতে তুলে নিয়ে আবারও মারধোর করে।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমদুল হক বলেন, র‌্যাব জানিয়েছে- তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করায় তারা দ্বীন ইসলামকে পিটিয়েছে।

এ ব্যাপারে র‌্যাব-৯ এর সিও উইং কমান্ডার রিয়াদ হাসান রাব্বানী জানান, দ্বীন ইসলাম র‌্যাবের গাড়িতে ঢিল ছুড়ে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করায় তাকে আটক করা হয়। কিন্তু তাকে কোন ধরণের নির্যাতন করা হয়নি। দ্বীন ইসলাম একজন দোকানদার হলেও তাকে সাংবাদিক সাজানো হচ্ছে।

(পিডিএস/এএস/নভেম্বর ০৫, ২০১৪)