স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ : পরকীয়ার জের ধরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের গৃহবধূ জামেলা খাতুন ওরফে ওজেলাকে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার স্বামী শরিফুল ইসলাম, ছেলে সাইদুল ইসলাম মান্নান ও প্রতিবেশী জাকির হোসেন জড়িত বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঝিনাইদহ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আক্তারুজ্জামান লিটন এ সব তথ্য জানান। জিজ্ঞাসাবাদে জামেলা খাতুনের ছেলে মান্নান পুলিশকে জানায় প্রতিবেশী চাচা রাজাপুর গ্রামের রুস্তম বিশ্বাসের ছেলে আব্দুল করিমের সঙ্গে তার মায়ের অবৈধ সম্পর্ক ছিল।

ঘটনার দিন শনিবার (২১ অক্টোবর) সকালে নিজেদের গোসলখানায় আব্দুল করিমের সঙ্গে তার মায়ের আপত্তিকর দৃশ্য দেখে তার বাবা শরিফুল ইসলাম ও জাকির হোসেনকে ডেকে আনে। পরে তাঁরা একত্রিত হয়ে প্রথমে জামেলা খাতুনকে হত্যা করে। পরে আব্দুল করিমকেও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। আব্দুল করিম গুরুতর আঘাতপ্রপ্ত হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার শ্বাসনালী কেটে গেছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সুত্রগুলো জানায়, নিহত জামেলার স্বামী বাড়িবাথাণ গ্রামের ইউসুফ মণ্ডলের ছেলে জাকির হোসেনের জমি বর্গা করে। জাকির হোসেনও বিভিন্ন সময় ওজেলার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করে। কিন্তু প্রতিবেশী আব্দুল করিমের কারনে পেরে ওঠে না। ফলে স্বামী শরিফুল ও তার ছেলে মান্নানের সঙ্গে পরামর্শ করে করিমকে শায়েস্তা করার ছক কষে। ঘটনার দিন সকালে সেই সুযোগ পেয়ে যায়। জামেলার গোসলখানায় দুইজনকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলে। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল করিম জানিয়েছেন নিহত জামেলার স্বামী শরিফুল ইসলাম ও প্রতিবেশী জাকির হোসেন জামালকে হত্যা করে তাকেও হত্যার চেষ্টা করে। নিহতের স্বামী শরিফুল ইসলাম গ্রেফতার হওয়ার আগে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন করিম তার স্ত্রীকে উত্যক্ত করতো। তাকে কু-প্রস্তাব দিত। রাজি না হওয়ায় তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। পরে করিম নিজেই আত্মহত্যার চেষ্টা করে। প্রতিবেশী সুজনের স্ত্রী রুপা খাতুন জানান, এক সময় করিম জামলাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। সেখান থেকেই মুলত বিরোধের সূত্রপাত।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আক্তারুজ্জামান লিটন আরও জানান, এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রামের কামাল আহমেদ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে মামলা করেছেন। পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন মামলাটির আসল রহস্য উদঘটনে আরো নিবিড় তদন্ত দরকার। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে নিহতের স্বামী, ছেলে ও জাকির হোসেন এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।

(একে/এএস/অক্টোবর ২৪, ২০২৩)