বিপুল কুমার দাস, রাজৈর : মাদারীপুর রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নে সেনদিয়া গ্রামে  সার্বজনীন দুর্গা মন্দির প্রাঙ্গণে শারদীয় দুর্গাপূজা আজ মঙ্গলবার বিজয় দশমীর মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়।দেবী মায়ের কাছে ভক্তরা সকলেই মনের আকাঙ্ক্ষা প্রার্থনা করে। অঞ্জলি অর্পণ ও সিঁদুর খেলার মধ্যে দিয়ে দেবী মাকে বিদায় জানায়। 

বাঙালীর বারো মাসে তেরো পার্বণ, তার মধ্যে অন্যতম হল *দুর্গোৎসব’,* আর এই দুর্গোৎসব বাঙালীদের শ্রেষ্ট উৎসব। কাশ বনের দোলায় দেবীপক্ষের সূচনা বাঙালির মনকে আলোড়িত করে। বাঙালির দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটে মহালয়ার শুভ বন্দনাতে। শরৎ এর মেঘের ভেলা আর শিউলি ফুলের গন্ধ দশভুজার আগমনকে উন্মুক্ত চিত্তে স্বাগত জানায়। পুজোর এই কয়েকটা দিন খুশির আমেজে বন্ধু বান্ধব ও আত্মীয় পরিজনদের সাথে আনন্দে কাটুক।

বিজয়া দশমী সম্পর্কে শুধু জানি দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জন বা প্রতিমা জলে ভাসিয়ে দেওয়া।

কোন বিজয়? কার বিজয়? কেন-ই-বা দশমী বলা হয়? অনেকেই জানি না এর মূলকথা। তা হলে জেনে রাখা ভাল যে, কিসের বিজয়, কার বিজয় আর কিসের দশমী। এসব না জানার কারণেই অনেক সমর দৈনন্দিন জীবন চলার মাঝে আমাদের অনেকের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। তাই আজকে আমার এই লেখা শুধু দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী নিয়ে। কিন্তু দশমীর আগে তো দেবী দুর্গার পূজারাম্ভ হয়, কাজেই দুর্গাদেবীর আবির্ভাব নিয়ে আগে কিছু লিখতে হয়।

ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব দেবতাদের মুখে এসব কথা শুনে খুবই রেগে হলেন। রাগে তখন ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব- এর শরীর থেকে মহাতেজ নির্গত হতে লাগল। তাদের সাথে অন্যান্য দেবতাদের শরীর থেকেও তেজ নির্গত হতে শুরু করলো। এভাবে সব দেবতাদের তেজে এক নারী দেবীমূর্তি ধারণ করলো। এরপর অসুরদের নিধন করার জন্য দেবীকে অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সজ্জিত করলেন দেবতারা। দিলেন তাকে বহন করার জন্য বাহনও, যা দিয়েছে হিমালয়।

তখন দেবীর গর্জনে সমগ্র আকাশ পরিপূর্ণ হলো এবং ভীষণ প্রতিধ্বনি উঠতে লাগলো। তা দেখে উপস্থিত দেবগণ আনন্দে সিংহবাহিনীর জয়ধ্বনি করতে লাগলেন। অতঃপর সকল দেবতা তাকে 'জয়া' নাম প্রদান করে ভক্তিভরে নতদেহ হয়ে দেবীকে ভক্তি করলেন।

এরপর লঙ্কার রাবণ নিজের দুর্গতি নাশ হওয়ার জন্য দুর্গা নামে দুর্গাপূজা প্রথম করেছে। উদ্দেশ্য ছিল মনোবাসনা পূর্ণ হওয়া ও দুর্গতি দূর হওয়ার জন্য। তাই অনেকে দেবীদুর্গাকে দুর্গতিনাশিনী বলেও ডাকে। আবার শী রামচন্দ্রও করেছে দুর্গাদেবীর পূজা, তাও মনোবাসনা পূর্ণের জন্যই করা। সেই থেকেই ধারাবাহিকভাবে আমাদের মর্তলোকে দেবী দুর্গার পূজা হয়ে আসছে। অনেক দেশে এই দুর্গতিনাশিনী বা দুর্গাদেবীর পূজা লগ্নে এক কুমারী মেয়েকেও মার্তৃরূপে পূজা করেন।

(বিডি/এসপি/অক্টোবর ২৪, ২০২৩)