নিজস্ব প্রতিবেদক, কুমিল্লা : কুমিল্লার বুড়িচং থেকে সাকিবুল হাসান নামে ৭ বছরের এক শিশুকে অপহরনের ১২ দিন পর মোবাইল ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে বি-বাড়ীয়া জেলার খলাপাড়া এলাকা থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অপহরণকারীকে গ্রেফতার পূর্বক স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অপহৃত শিশুটিকে উদ্ধার করেছে বুড়িচং থানা পুলিশ।

বুড়িচং থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জহিরুল ইসলাম জানান, গত ৩০ অক্টোবর লক্ষীপুর জেলার রামগতি থানার চর রমিজ গ্রামের মৃত মন্তাজুল ইসলামের পুত্র আবদুল হক বুড়িচং থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের বিবরণে জানা যায়, আবদুল হক দীর্ঘ ৩ বছর যাবৎ বুড়িচং উপজেলার চকবস্থা এলাকায় স্থানীয় আবদুল হক মেম্বারের চাতালে কাজ করে আসছে। ওই চাতালের সর্দার হিসেবে তার অধীনে ১০/১২ জন শ্রমিক কাজ করত। গত ৯ অক্টোবর সকালে ওই চাতালের মুরাদ নামে এক শ্রমিক কাজের জন্য টাকা চায়। এসময় চাতাল শ্রমিক সর্দার আবদুল হক শ্রমিক মুরাদকে তার কাজের প্রাপ্য টাকার চেয়ে বেশি পরিমান টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শ্রমিক সর্দারের সাথে মুরাদের কথা কাটাকাটি হয়।

এদিকে গত ২৪ অক্টোবর সকালে শ্রমিক সর্দার আবদুল হকের ৭ বছরের ছেলে সাকিবুল হাসানকে ঘরে না পেয়ে এদিক সেদিক খোজাখুজি করতে থাকে। পরে স্থানীয় দোকানদার বেলাল হোসেন এর কাছ থেকে জানতে পারে মুরাদ তাঁর দোকান থেকে একটি পাউরুটি কিনে দিয়ে সাকিবকে নিয়ে চলে গিয়েছে। তাৎক্ষনিক ভাবে মুরাদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। দু’দিন পর ২৬ অক্টোবর দুপুরে মুরাদ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানায় যে সাকিবকে সে অপহরণ করেছে এবং ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ ঘটনার পর চাতাল শ্রমিক সর্দার আবদুল হক ৩০ অক্টোবর বুড়িচং থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধিত ২০০৩ এর ৭/৮ ধারায় অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি এ ধারায় একটি মামলা দায়ের করে, মামলা নং ৪৩।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বুড়িচং থানার এস আই ইমাম হোসেন মামলার প্রেক্ষিতে মুক্তিপণ দাবিকৃত মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে বি-বাড়ীয়া জেলার আশুগঞ্জ ও সদর এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৪ অক্টোবর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুহিলপুর গ্যাস ফিল্ডের ৩ নং ব্লক খলাপাড়া এলাকা থেকে অপহরকারী মুরাদ (৩০) কে গ্রেফতার করে। পরে মুরাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী খলাপাড়া এলাকার একটি চাতালের ১২ নং কক্ষ থেকে অপহৃত শিশু সাকিবুল হাসানকে উদ্ধার করে। আটককৃত অপহরণকারীর বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানার আগানগর গ্রামে, তার পিতার নাম ছিদ্দিক মিয়া। পুলিশ বুধবার ধৃত আসামী ও উদ্ধারকৃত শিশুটিকে বুড়িচং থানায় নিয়ে আসে ও পরে আদালতে প্রেরণ করে।

(এইচকেজে/এএস/নভেম্বর ০৫, ২০১৪)