সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : ‘ট্রেন দুর্ঘটনায় করিমগঞ্জের শফিকুল নিহত হলেও নাম নেই অনুদান নেই’ এই শিরোনামে গত ২৭ অক্টোবর শুক্রবার দৈনিক পূর্বকণ্ঠ পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। পত্রিকার প্রতিবেদনটি গত রবিবার ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ এর নজরে আসে। পরে তিনি তাৎক্ষণিক করিমগঞ্জের নিহত ওই পরিবারের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করেন। এরপর নিহত শফিকুল ইসলামের স্ত্রী খাদিজা আক্তার ও ছোট ভাই সাইকুল সন্ধ্যায় ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে যোগাযোগ করেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজের ঢাকা যাওয়ার কথা থাকলেও তা বাতিল করে তিনি ওই নিহত পরিবারের সাথে সাক্ষাত করেন এবং নিহত শফিকুল ইসলামের স্ত্রী খাদিজা আক্তারের হাতে ২৫ হাজার টাকা তুলে দেন। এছাড়া দুর্ঘটনায় নিহতের তালিকায় করিমগঞ্জের জয়কা ইউনিয়নের পানাহার গ্রামের শ্রমজীবী শফিকুল ইসলামের নাম অন্তর্ভূক্ত করেন।

জানা যায়, ভৈরবের ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা যায় করিমগঞ্জের জয়কা ইউনিয়নের পানাহার গ্রামের শ্রমজীবী শফিকুল ইসলাম (৩৪)। সঙ্গে ট্রেনযাত্রী ছিলেন তার মামা রুবেল। তারও পা ভেঙে গেছে। কিন্তু উদ্ধারকারীরা শফিকুলকে অন্য আহতদের সঙ্গে একটি অ্যাম্বুলেন্সে ওঠালেন ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠাবেন বলে।

এদিকে আহত রুবেল বাড়িতে ফোন করে দুর্ঘটনার খবর জানালে শফিকুলের ছোট ভাই সাইকুল, প্রতিবেশি কামরুল ইসলামসহ কয়েকজন একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে ছুটে আসেন ভৈরবে। সন্ধ্যা ৭টায় তারা অ্যাম্বুলেন্সের কাছে গিয়েই বুঝতে পারেন, শফিকুল মারা গেছেন। অথচ মৃত শফিকুলকেই পাঠানো হচ্ছে পঙ্গু হাসপাতালে। তখন তারা উদ্ধারকারীদের বলে মৃত শফিকুলকে একই অটোরিকশায় করে বাড়িতে নিয়ে আসেন রাত সাড়ে ৯টার দিকে। রাতেই জানাজা পড়িয়ে এলাকার গোরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। যার কারণে শফিকুলের নাম নিহতদের তালিকায় লিপিবদ্ধ হয়নি। পরে দৈনিক পূর্বকণ্ঠ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে ২৯ অক্টোবর রোববার নিহতের পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুদানের ২৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। তাছাড়া নিহত শফিকুল ইসলামের নামও নিহতের তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হয়।

এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ বলেন, আমরা নিহতদের পরিবারের খোঁজ খবর নিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের হাতে ২৫ হাজার টাকা অনুদান তুলে দিতে পেরেছি বলে নিজের কাছে ভালো লাগছে। নিহতের নামও সরকারি লিস্টে তালিকাভুক্ত করে দিয়েছি। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে যে ১ লক্ষ টাকা দেওয়ার ঘোষণা করা হয়ছে ওই পরিবার সেই টাকাও পাবে।

(এসএস/এসপি/অক্টোবর ৩১, ২০২৩)