সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে বিল্লাল হোসেন (৪০) ও রেফায়েত উল্লাহ তনয় (২৩) নামে ২ বিএনপি নেতা নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। বিএনপি নেতা-কর্মীদের হামলায় কুলিয়ারচর থানার ওসি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফাসহ কমপক্ষে ১৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। বিএনপি’র নেতা কর্মী আহত হয়েছে অন্তত ২০ জন। কুলিয়ারচর ও ভৈরবের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ পিপিএম (বার) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

গুলিতে নিহত বিল্লাল হোসেন স্থানীয় ছয়সূতী ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি ও মাধবদী গ্রামের কাজল মিয়ার ছেলে। তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় বলে জানান তার পরিবারের সদস্যরা। অপরদিকে ইউনিয়ন যুবদল নেতা রেফায়েত উল্লাহ তনয় বড় ছয়সূতী চক বাজার এলাকার কাউসারের ছেলে। সে ঘটনাস্থলেই গুলিতে আহত হয়ে মারা যায়। ৩১ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার ছয়সূতী বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রেফায়েত উল্লাহ তনয়ের চাচা মো. আবুল কালাম (৫৬) ও ভগ্নিপতি ফয়সাল মিয়া (৩০) বলেন, রেফায়েত উল্লাহ তনয় ছয়সূতী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি। পুলিশ-বিএনপি’র সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে আহত হলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান সে।

ঘটনার পর একদল দুর্বৃত্ত ছয়সূতী কাঁঠালতলী এলাকায় ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে একটি ঔষধের পিকাপ ভ্যান ভাংচুর করে রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেন।

কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, এ ঘটনায় তিনিসহ থানার কর্তব্যরত এএসআই মান্নান, এএসআই সাকিনুর, এএসআই জুয়েলসহ কমপক্ষে ১৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।

এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ পিপিএম (বার) ঘটনাস্থল পরিদর্শন কালে সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা জানেন মানুষের জানমাল রক্ষার্থে পুলিশ দায়িত্ব পালন করে। দুর্বৃত্তরা এই পুলিশকে টার্গেট করে এ রাস্তা বন্ধ করেছিলো। টায়ার জালিয়েছে, ককটেল বিস্ফোরণ করেছে, পুলিশকে টার্গেট করে ইটপাটকেল ছুঁড়েছে। পুলিশকে আহত এবং নিহত করার জন্য এহেন কোন কাজ নেই যে তারা করে নাই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের আইনানুগ অধিকার আছে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাজ করেছে। শুনেছি পুলিশসহ বেশ কিছু লোক আহত হয়েছে। নিহত ও আহতের বিষয় নিয়ে এখন পর্যন্ত অবগত নয়। হাসপাতাল গুলোতে খোঁজ নেওয়ার পর কনফার্ম হয়ে সঠিক তথ্য দেওয়া যাবে। দুর্বৃত্তরা যারা এই কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বর্তমানে বাজিতপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সত্যজিত কুমার ঘোষ পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে মোতায়েন আছে।

(এসএস/এসপি/অক্টোবর ৩১, ২০২৩)