রিপন মারমা, রাঙ্গামাটি : রাঙ্গামাটি কাপ্তাইয়ের ঐতিহ্যবাহী চিৎমরম বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মারমা সম্প্রদায়ের একটি মিলন মেলা মহা সংঘদান ও অষ্ঠপরিষ্কার দানানুষ্ঠান জগতের সকল প্রাণী ও প্রকৃতির মঙ্গল সুখ কামনায় রোগব্যাধী কবল থেকে পুরো পৃথিবীবাসী মুক্ত হওয়ার মানসে যথাযথ শৃঙ্খলা মেনে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়।

আজ মঙ্গলবার বিশ্ব-শান্তি বুদ্ধধাতু বোগোঃজাদি কমিটি উদ্যোগের, ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিন ব্যাপী কর্মসূচি মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়।

বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল পরম করুনাময়,পরিত্রান প্রার্থনা, অষ্টপরিষ্কার ও মহাসংঘদান, দানীয় যজ্ঞ, বুদ্ধপুজা, পঞ্চশীল প্রার্থনা, ধর্মীয় দেশনা, কল্পতরু প্রদক্ষিণ উৎসর্গ, তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধের পূজা গ্রহন, গৌতম বুদ্ধের অহিংস ধর্ম নিয়ে আলোচনা সভা, প্রদীপ ও পানীয় পূজা, সমবেত প্রার্থনাসহ নানাবিধ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।সেসময় তিন পার্বত্য জেলা থেকে পুণ্যার্থীরা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

এই মহা সংঘদান অনুষ্ঠানে চিৎমরম বৌদ্ধ বিহার (অধ্যক্ষ) ভদন্ত পামোক্ষা মহাথের বলেন, সংঘদানে চার-পাঁচজন ভিক্ষুকে দান করলেও সংঘ বলতে অতীত, অনাগত ও বর্তমান সমস্ত সংঘের (বৌদ্ধ সন্ন্যাসী) উদ্দেশ্য দান করা হয়। তিনি আরও বলেন, বৌদ্ধ দর্শনে দান হলো প্রশংসিত একটি কর্ম। সবাই জীবনে কম বেশি দান করে থাকে। দান শব্দের সঙ্গে মালিকানা স্বত্ত ত্যাগের বিষয়টি জড়িত, আর এতে মানুষের লোভ চিত্ত ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়।

প্রাণী হত্যা না করা, বিনা অনুমতিতে অপরের জিনিস না ধরা, মিথ্যা কথা না বলা, নিজ স্বামী স্ত্রী ব্যতীত কাম সেবন না করা ও মদ গাঁজাসহ সকল নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন না করা এই পাঁচটি শীল বা পঞ্চনীতি গ্রহন করে মুহুর্তের মধ্যে সবাই এক সুন্দর চেতনায় ঋদ্ধ হন।তাইতো আয়োজক স্থায়ী প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক পার্বত্য চট্টগ্রাম মানবিক সেবা সংস্থা মংপ্রু মারমা জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বিশ্ব-শান্তি বুদ্ধধাতু বোগোঃজাদি কমিটি'র উদ্যোগের এই মহা সংঘদান আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে দায়ক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ সদস্য শতরূপা চাকমা, খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক জেলা পরিষদ সদস্য রক্তুপল ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ সদস্য মংক্যচিং চৌধুরী, বিশ্ব-শান্তি বুদ্ধধাতু বোগোঃজাদি প্রতিষ্ঠাতা কেতু মারমা (আফোশি) প্রমূখ।

(আরএম/এসপি/অক্টোবর ৩১, ২০২৩)