রিয়াজুল রিয়াজ, বিশেষ প্রতিনিধি : সিলেটের বিছানাকান্দি সীমান্তের মুকুটহীন সম্রাট চোরাকারবারি নুরুজ্জামান নুরু। বহু অপকর্মের হোতা নুরু স্থানীয় থানা পুলিশের যোগসাজশে সিলেটের বিছানাকান্দি সীমান্তে একক আধিপত্য বিস্তার করে গত তিন মাসে প্রায় চার থেকে পাঁচ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।

সিলেটের গোয়াইনঘাট থানাধীন রুস্তমপুর ইউনিয়নের হাদারপার গ্রামের মৃত: নাসির উদ্দীন ছেলে নুরুজ্জামান ওরফে নুরু মিয়া। সিলেটের অন্যতম পর্যটন এলাকা বিছানাকান্দি সীমান্ত দিয়ে তিনি প্রতি রাতে ও দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্বিঘ্নে ভারত থেকে চোরাই পথে মাদক, কাপড়, কসমেটিক, বিড়ি, চিনিসহ নানান ধরণের ভারতীয় পণ্য দেশে ঢুকিয়ে থাকেন। যার ফলে বাংলাদেশ সরকার একটা বিরাট অংশের রাজস্ন হারায়।

এছাড়া তার নামে বৈধ ব্যবসায়ীদের থেকে চাঁদাবাজি, প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি ও পুলিশের লাইনের টাকা কালেকশনসহ নানা ধরণের অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। যদিও প্রশাসন সব সময়ই চোরাকারবারিদের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন এবং তারা এই ধরনের কোন চাঁদাবাজি'র খবর পেলে তাদের দারস্থ হয়ে অভিযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন।

বিছানাকান্দি সিলেট সীমান্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন একালা হওয়া স্বত্ত্বেও কি শক্তি বা খুঁটির জোড়ে নুরু'র মতো চোরাকারবারি'রা দেশের শুল্ক ফাঁকি দিয়ে এসব অপকর্মে লিপ্ত থাকে, এমন প্রশ্ন স্থানীয় এক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের। এক ব্যবসায়ীর দাবী, 'আমরা সরকারকে ট্যাক্স দিয়ে মাল আনি, তারপরও নুরুকে কয়েক ধাপে টাকা দিতে হয়।'

হাদারপার বাজারের শাহাবুদ্দিন চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে বিশাল সম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন চোরাকারবারি নুরুজ্জামান ওরফে নুরু। ওই সাম্রাজ্যেই চোরাকারবারি নুরুর অফিস ও বাসা। অফিসে বসেই বিছানাকান্দি সীমান্তের চোরাকারবারি কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন তিনি। আর ওসব চাঁদাবাজির টাকা কালেকশনের কাজে তাকে সহযোগিতা করে থাকেন চোরাকারবারি নুরু'র সহযোগী মোশাররফ।

উল্লেখ্য, সিলেট সীমান্ত দেশের চোরাচালানের অন্যতম স্বর্গরাজ্য। সিলেট সীমান্তের প্রায় ৫০ টির বেশি পয়েন্ট দিয়ে নিয়মিতভাবে চলে চোরাচালান। এসব চোরাচালানের সাথে জড়িত প্রায় হাজার খানেক লোক। সিন্টিকেট করে চলে এসব চোরাচালান। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের কিছু লোকজন এর সাথে জড়িত বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

(আরআর/এসপি/নভেম্বর ০৪, ২০২৩)