মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : বিভৎস নির্মমতার শিকার রেজাউল করিম নাঈম (২১) নামে মৌলভীবাজারের কলেজ পড়ুয়া এক কিশোরের। ঘরে ঢুকে বাবা-মা’র সামনেই ওই কিশোরকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্য কুপিয়ে রক্তাক্ত করে পালিয়ে যায় প্রতিবেশী পাষন্ডরা। হাসপাতালে নেয়ার ৯ থেকে ১০ ঘন্টা পর মৃত্যু হয় নাঈমের, চিরতরে হারিয়ে যায় সম্ভানার ওই কিশোর।   

মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বর্ষিজোড়া গ্রামে ঘটে নির্মম এই ঘটনা।

বিষয়টি ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে নিন্দার ঝর উঠে চারিদিকে। পরিবার জুড়ে সৃষ্টি হয় শোকের মাতম। ওই ঘটনায় বুধবার সকালে সোহান নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত রেজাউল করিম নাঈম ওই এলাকার চেরাগ মিয়ার ছেলে। সে এ বছর মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেছে। তারা দুই ভাই ও একবোন। নাঈম পরিবারে সবার বড়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশী নুরুল মিয়া নাঈমের বাবা চেরাগ মিয়ার সাথে ফেসবুক আইডি নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রনি ও তার বাবা নুরুল মিয়াসহ কয়েককজন মিলে নাঈমের বাবা ও মায়ের উপর আক্রমণ চালায়। মূলত ওই ঘটনা সমাধানে এগিয়ে আসেন নাঈম ও তাঁর বোন। এর পর তাদের ওপরও চালানো হয় হামলা। এর পরোক্ষণে নাঈমকে নুরুল মিয়া ও তার ছেলে রনিসহ কয়েকজন মিলে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত গুরুতর অবস্থায় নাঈমকে প্রথমে মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসাধীন আবস্থায় বুধবার রাত ৪ টার দিকে মৃত্যু হয়।

বুধবার (৮ নভেম্বর) বিকাল ৫টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহত নাঈমের মরদেহ সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে নিজ বাড়ি বর্ষিজোড়ায় নিয়ে আসার কথা রয়েছে।

নিহত নাঈমের বোন তায়িবা জানান, তাঁর ভাইয়ের কোন অপরাধ নেই, হামলাকারীরা ফোন করে বাড়িতে এসে আমাদের ঘরে ঢুকে আমার আব্বার সাথে ফেসবুক আইডি নিয়ে তর্কাতর্কি শুরু করলে তা সমাধানে এগিয়ে যায় আমার ভাই। আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিচার চাই।

মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, ফেসবুকে পোস্ট নিয়ে বিরোধের জেরে এই ঘটনা। মামলা প্রক্রিয়াধীন, একজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের ধরতেও অভিযান চলছে।

(একে/এসপি/নভেম্বর ০৮, ২০২৩)