মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী : নোয়াখালী সুবর্ণচর উপজেলার চর আমান উল্যাহ ইউনিয়নের চর বজলু্ল করিমের মৌজার ২০৭ নং খতিয়ানে ট্রাস্টের জায়গা দাবি করে অভিযুক্ত মাহফুজ প্রকৃত ভূমি মালিকদের হয়রানি ও চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযুক্ত মাহফুজ নিজে মামলা করেও সে মামালায় হেরে যান, পরবর্তিতে তিনি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে অভিযোগ দিলে তার কাগজ পত্র পর্যালোচনা করে দেখার পর মাহফুজ সেখানেও হেরে যান সব শেষে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অঙ্গিকার নামা দেয়ার পরও অভিযুক্ত মাহফুজ বিভিন্ন সময় মালিকগন স্থাপনা তৈরী করতে গেলে নানান নাম্বার থেকে ৯৯৯ কল দিয়ে মালিকপক্ষকে হয়রানি করেন, থানায় বৈঠকের কথা বললেও তিনি সেখানে আসেন না। চতুর মাহফুজ নানা ভাবে উক্ত ভূমির প্রকৃত মালিক প্রবাসী রায়হান শরীফ থেকে খরিদ সূত্রে মালিক হন আব্দুল হাদি, আজিজ খান, কটেক্টর হাসান, আবুল হোসেন, হাজী আলা উদ্দিন, হাজি রফিক, মোঃ হোসেন, আর্মি মাকসুদুর রহমান, মোঃ হানিফ কন্টেক্টর, মোঃ সোহাগ।

মাহফুজের সম্পত্তির যে কাগপত্র দাবী করেন সেটি চর আমান উল্যাহ মৌজা হলেও তিনি মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে ভুক্তভোগীদের হয়রানি করছেন বলে দাবী করেন উপরোক্ত মালিকগন।

১৪ নভেম্বর মালিকপক্ষ স্থাপনা তৈরীর কাজ করতে গেলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ৯৯৯ ফোন করে পুলিশ নিয়ে হয়রানি করেন অভিযুক্ত মাহফুজ।

মাহফুজের করা মামলায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অভিযোগ তদনন্তের প্রতিবেদন হুবহু তুলে ধরা হলো। সূত্র : পুলিশ অফিস স্মারক নং- ২২৭৬/২য়, তাং- ০২/০৬/২০১৮ইং যথা বিহীত বিনীত নিবেদন এই যে, সূত্রে বর্ণিত স্বারক মূলে অভিযোগ খানা অত্র অফিসে প্রান্তির পর অফিসার ইনচার্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা আমার নামে হাওলা করিলে আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী দায়িত্ব ভার গ্রহন পূর্বক ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬০ ধারা মোতাবেক অনুসন্ধানের স্বার্থে নোটিশ করি। নোটিশের নির্ধারিত তারিখে উভয়পক্ষ দ্বয়ের ও স্বাক্ষীদের জবানবন্দি শুনি। সরজমিনে, প্রকাশ্যে, গোপনে তদন্ত করি। আমার তদন্তে ও স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য প্রমানে জানা যায়, হাতেম আলী পিতা মৃত মুখি তোফাজল বারী, সাং- হরিশপুর, উপজেলা- সন্দ্বীপ, জেলা- চট্টগ্রাম, তিনি হাতেম আলী ট্রাষ্ট নামে নাম করণ করিয়া চনা জব্বর থানাধীন চর বঙ্গদুল করিম মৌজার ২০৭ নং খতিয়ানে ১০.৪০ শতক, ৬৩১ খতিয়ানে ২,৯৫, ১৭২ খতিয়ানে ২.২১, ৮৮ ন খতিয়ানে ৮০, ১৯৯ নং খতিয়ানে ২.৮০, ২৯৫ নং খতিয়ানে ১.২৫, ভূমিসহ সন্দ্বীপ ও চট্টগ্রামে আরো সম্পতি হাতেম আলী ট্রাষ্ট্রের নামে দান করিয়া তিনি নিলে ঐ ট্রাষ্ট্রের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। যাহাতে উল্লেখ আছে যে, তাহার মৃত্যুর পর তাহার ওরশজাত পুত্র ঐ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হবেন এবং ঐ ট্রাষ্ট্রের নামে বরাদ্ধ কৃত ভূমির আয় হইতে তাহার পুত্র কুলের ওয়ারিশগনের বিভিন্ন দুঃসময়ে শিক্ষা, সাহায্য, চিকিৎসা, দীন ইসলাম খাতে ৬০ ভাগ অর্থ ব্যায় বাকী ৪০ ভাগ অর্থ চেয়ারম্যান নিজে ভোগ করিবেন। পরবর্তীতে বাতেম আলীর প্রথ সংসারের স্ত্রীর সাথে ঝগড়া বিবাসের কারণে হাতেম আলী নিজে ট্রাষ্ট্রের ১০নং রুল অনুযায়ী উক্ত ট্রাষ্ট্রের সম্পতি তিনি তার অন্য ছেলে মেয়েদের নামে রেজিঃ হেবা দলিল করিয়া দেন। এই হেবা দলিলমূলে হাতেম আলী ওয়ারিশ সম্পত্তির দাবীদার। অন্যদিকে বিবাদী মাহফুজ হাতেম আলীর ভাতিজা হন। তিনি উক্ত ট্রাষ্ট্রের সম্পত্তি ট্রাষ্ট্র মূলে পাবী করেন। কিন্তু ট্রাষ্ট্রের কোথাও ট্রাষ্ট্র মূলে হাতেম আলীর পূত্র ফুলের ওয়ারিশগং সম্পত্তি দাবির কথা উল্লেখ নাই। শুধুমাত্র ট্রাষ্ট্র সম্পত্তি হইতে আগত আর হইতে তাহার পিতৃকুলের ওয়ারিশান তাহাদের মুরলিনে সাহায্য পাবে উল্লেখ আছে। এই নিয়ে তাহাদের মধ্যে বিরোধ চলমান। পরবর্তীতে উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাদী বিবাদী ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে উক্ত ট্রাষ্ট্রের বৈধতা নিয়ে বি সিনিয়র আইনজীবীদের মতামতের সিদ্ধান্ত হয়। সেই প্রেষিতে জনাব নাজমুল হক, জনাব, আকৃষ্ণ কুমার, জনাব আবদুল গোফরান সাহেবের আইনগত মতামতে উক্ত ট্রাষ্ট আইন মেনে করা হয় নাই এবং মুসলিম Personal Law আইন অনুযায়ী হয় নাই বিধায় এবং যেহেতু হাতেম আলী তাহার পুত্র ও কন্যাদের বিভিন্ন দলিলমুখে উক্ত সম্পত্তি দিয়ে গেছেন। সেহেতু তাহারাই উক্ত সম্পত্তির মালিক হইবেন। বর্ণিত বিবাদী উক্ত সম্পত্তির মালিক নহে মর্মে আইনগত মতামত দেন। বাদী বিবাদী উভয় উক্ত আইনগত মতামত মানিয়া নিয়া উভয়ে মিলেমিশে যান। তাহারা ভবিষ্যতে আর কোন আইন অমান্য কাজ করিবে না মর্মে অধিকার করেন। বাদীকে মামলার ফলাফল জানালো হইল। বাদী তাহার বিচার কার্যের সন্তুষ্টি প্রকাশ করে।

এছাড়াও বাদী মাহফুজ সব মেনে নিয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সকলের উপস্থিতিতে অঙ্গিকার নামা প্রদান করেন, অঙ্গিকার নামাটি হুবুহু তুলে ধরা হলো।অঙ্গীকার-নামা সূত্রঃ পুলিশ সুপার, নোয়াখালী অফিস স্মারক নং-২২৭৬/২য়, তাং-০২/০৬/১৮ইং।

আমি সূত্রোক্ত স্মারকের বিবাদী মাহফুজুর রহমান, পিতা-মৃত ছায়েদুল হক, সাং-চর বজলুল করিম(মাহফুজের বাড়ী), চর আমানউল্যাহ, থানা-চরজব্বর, জেলা-নোয়াখালী এবং স্মারকের বাদীর পক্ষে মোঃ নজরুল ইসলাম, পিতা-মৃত মুন্সি আলী আহাম্মদ, সাং-হারামিয়া(কাশেম সিকদার বাড়ী), থানা-সন্দীপ, জেলা-চট্টগ্রাম, হালসাং-০১ নং পানির কল, বাসা-দিপালয়, হালিশহর, চট্টগ্রাম অন্য ১৩/০৭/২০১৮ইং তারিখ উপস্থিত বর্ণিত সাক্ষীদের মোকাবেলার এই মর্মে অঙ্গীকার-নামা মূলে অঙ্গীকার করিতেছি যে, সূত্রোক্ত স্মারকের বাদী একখানা অভিযোগ দায়ের করার পর ডিবি অফিস, নোয়াখালীতে উপস্থিত সাক্ষীদের মোকাবেলায় সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে এবং আইনজীবি জনাব মোঃ নাজমুল হক, এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, জজ কোর্ট, নোয়াখালী, জনাব অঞ্জন কুমার চৌধুরী, এডভোকেট, জজ কোর্ট, নোয়াখালী এবং জনাব আবদুল গোফরান, এডভোকেট, জজ কোর্ট, নোয়াখালীদের গত ০৮/০৭/২০১৮ইং তারিখের প্রদত্ত আইনগত মতামতের প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হই যে, জনাব হাতেম আলী বিগত ২৯/০৫/১৯৮৫ইং তারিখে ৯০১০নং ট্রাষ্ট আইনগত মতামতের আইন সম্মত না হওয়ায় এবং উক্ত ট্রাষ্ট হইতে তাহার পুত্র কন্যা দ্বয়কে হেবা রেজিষ্টি মূলে ট্রাষ্টের সম্পত্তি হেবা দলিল গ্রহীতারা আইনগত মতামতের সম্পত্তির মালিক হওয়ায় উভয় পক্ষ আইনজীবিদের আইনগত মতামত মানিয়া নেয়। বর্তমানে যাহারা উক্ত ভূমিতে দখলে আছে, তাহারা উক্ত ভূমি দেখাশোনা করিবে। ভবিষ্যতে উক্ত বিরোধীয় ভূমিতে আমি বিবাদী পক্ষ কোন রকম হস্তক্ষেপ করিব না। আমরা উভয়ে আইন মেনে চলিবো এবং আইন বহির্ভূত কোন কাজ করিব না। এই আমাদের অঙ্গিকার আমরা বাদী-বিবাদী উভয়ে উপরোক্ত বিষয়াদি স্বজ্ঞানে, সুস্থ্য মস্তিষ্কে পড়িয়া বুঝিয়া এবং মানিয়া উপস্থিত নিম্ন বর্ণিত সাক্ষীদের মোকাবেলায় অত্র অঙ্গীকার-নামায় নিজ নিজ নামীয় স্বাক্ষর প্রদান করিলাম মর্মে মেনে নেন উভয় পক্ষ তার পরেও মাহফুজ মোটা অংকের চাঁদাদাবী করেই যাচ্ছেন প্রকৃত মালিক পক্ষের কাছ থেকে।

জমির প্রকৃত মালিক পক্ষ হন আব্দুল হাদি, আজিজ খান, কটেক্টর হাসান, আবুল হোসেন, হাজী আলা উদ্দিন, হাজি রফিক, মোঃ হোসেন, আর্মি মাকসুদুর রহমান, মোঃ হানিফ কন্টেক্টর, মোঃ সোহাগ সকলে মাহফুজের এমন বেপোরোয়া হয়রানি বন্ধে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

অভিযুক্ত মাহফুজের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে উক্ত বিষয়ে জানতে চাইলে ফোনের লাইন কেটে দেন, একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।

(আইইউএস/এএস/নভেম্বর ১৪, ২০২৩)