স্টাফ রিপোর্টার : গেলো সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন হলেও বছরের পর বছর লভ্যাংশ না দিয়ে ‘জেড’ গ্রুপ বা পচা কোম্পানির তালিকায় স্থান করে নেওয়া দুটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দামে বড় উত্থান হয়েছে।

এক সপ্তাহেই কোম্পানি দুটির শেয়ার দাম ৩০ শতাংশের ওপরে বেড়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে শ্যামপুর সুগার মিল এবং জিল বাংলা সুগার মিল। এ দুটি কোম্পানিই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষ দুটি স্থান দখল করেছে।

এর মধ্যে সব থেকে বেশি দাম বেড়েছে শ্যামপুর সুগার মিলের। গেলো সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৩২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ৫৭ টাকা ৩০ পয়সা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ২৩৬ টাকা, যা আগের সপ্তাহের শেষে ছিল ১৭৮ টাকা ৭০ পয়সা।

শেয়ার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ কোম্পানিাটির শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৬৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

হঠাৎ শেয়ারের এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি ১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। সর্বশেষ কবে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়েছে সে সংক্রান্ত কোনো তথ্য ডিএসই থেকে পাওয়া যায়নি। বছরের পর বছর লভ্যাংশ না দেওয়ায় কোম্পানিটির স্থান হয়েছে জেড গ্রুপে।

এদিকে সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসের ব্যবসায় কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ১০ টাকা ৬৮ পয়সা লোকসান করেছে। ৫ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের এই কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ৫০ লাখ। এর মধ্যে ৫১ শতাংশ শেয়ার আছে সরকারের কাচে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৪৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ শেয়ার আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ শেয়ার আছে।

দাম বাড়ার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা জিল বাংলা সুগার মিলের শেয়ার দাম বেড়েছে ৩০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ টাকা ২০ পয়সা। ১৯৮৮ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া এই কোম্পানিটিও কবে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়েছে, সেই তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বছরের পর বছর লভ্যাংশ না দেওয়ায় কোম্পানিটির স্থান হয়েছে পচা জেড গ্রুপে।

এদিকে সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসের ব্যবসায় কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি ১৯ টাকা ৭২ পয়সা লোকসান করেছে। ৬ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের এই কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ৬০ লাখ। এর মধ্যে ৫১ শতাংশ শেয়ার আছে সরকারের কাছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৩৬ দশমিক ১৯ শতাংশ শেয়ার আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১২ দশমিক ৮১ শতাংশ শেয়ার আছে।

এছাড়া গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা- প্যাসেফিক ডেনিমসের ২৮ দশমিক ২৮ শতাংশ, বিডি থাই অ্যালুমেনিয়ামের ২৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের ২১ দশমিক ৬৩ শতাংশ, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের ১৪ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের ১৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ, ইভিন্স টেক্সটাইলের ১২ দশমিক ৭৭ শতাংশ, দি ঢাকা ডাইংয়ের ১২ দশমিক ১২ শতাংশ এবং এসকে ট্রিমসের ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ দাম বেড়েছে।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৮, ২০২৩)