আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার প্রধান হাসপাতাল আল-শিফার অভ্যন্তরে টানেলের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। কিন্তু ইসরায়েলের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মুনির আল-বুর্শ।

তিনি আল-জাজিরাকে বলেন, ইসরায়েলিরা গত ৮ দিন ধরে হাসপাতালটিতে অবস্থান করলেও এখন পর্যন্ত কিছুই খুঁজে পায়নি। ইসরায়েল বহু আগে থেকেই দাবি করে আসছিল যে, গাজা উপত্যকার আল-শিফা হাসপাতালের নিচে হামাসের কমান্ড সেন্টার ও টানেল রয়েছে। তবে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এই দাবি বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে আসছে।

ইসরায়েলি সেনারা গত ১২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে শিফা হাসপাতালে আগ্রাসন চালিয়ে এটি দখল করে নেয়। রোববার তারা দুটি আলাদা ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে দাবি করে যে, ওই হাসপাতালে একটি টানেল খুঁজে পাওয়া গেছে।

ফুটেজে যে টানেলটি দেখানো হয়, তার অপর মুখ বন্ধ পাওয়া যায় এবং ভেতরে কোনো হামাস যোদ্ধা কিংবা কোনো বন্দিকে দেখা যায়নি। তারা অপর একটি ভিডিওতে দাবি করেছে, গত ৭ অক্টোবর হামাস তাদের হাতে আটক দুজন বন্দিকে এই হাসপাতালে নিয়ে এসেছিল। তাদের দাবি অনুযায়ী, হামাস এই হাসপাতালকে তাদের সামরিক কাজে ব্যবহার করে আসছে।

কিন্তু ইসরায়েলি সেনাদের এমন দাবির জবাব দিয়েছে হামাস। সংগঠনটির টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা টানেল খুঁজে পাওয়ার যে দাবি করেছে সেটি হাসপাতালের ভেতরে নয় বরং হাসপাতাল থেকে বেশ খানিকটা দূরে অবস্থিত একটি গর্ত। ভিডিওটিতে একটি পানির কূপ এবং আরেকটি টানেলের ভিডিও জোড়া লাগিয়ে প্রদর্শন করা হয়েছে বলে হামাসের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া দুই বন্দিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে হামাস বলছে, গত ৭ অক্টোবরের অভিযানের দিন তাদের হাতে আটক ইসরায়েলি বন্দিদের মধ্যে যারা আহত ও অসুস্থ ছিল তাদেরকে গাজার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। এরপর সুস্থ হলে তাদেরকে গোপন ও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। কাজেই হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ করা যে ভিডিও ইসরায়েলিরা দেখিয়েছে তাতে হামাসের কোনো গোপন তৎপরতা ধরা পড়েনি।

গাজায় ইসরায়েলের হামলায় লাশের সারি দীর্ঘ হচ্ছে। প্রতিদিনই সেখানে হতাহতের ঘটনা সামনে আসছে। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে সংঘাত শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রতিদিনই সেখানে হামলা চালিয়ে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হচ্ছে। এ থেকে বাদ যাচ্ছে না শিশুরাও। ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রায় দুই হাজার মানুষ চাপা পড়েছে বলেও আশঙ্কা।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ২০, ২০২৩)