কুমিল্লা প্রতিনিধি : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিহত তেরটি দেশের ৭৩৭জন বীরযোদ্ধার আত্মার শান্তি কামনায় প্রার্থনা ও শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেছেন কমনওয়েলথভূক্ত দেশের হাইকমিশনার ও প্রতিনিধিগণ। শুক্রবার সকালে কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ারসিমেট্রির হলিক্রস পাদদেশে প্রার্থনা ও ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলীর মধ্যদিয়ে বারোটি দেশের হাইকমিশনার ও প্রতিনিধিগণ নিহত সৈনিকদের স্মরণ করেন।

গভীর শ্রদ্ধাভরে দিনটি পালনের উদ্দেশ্যে সকাল সাড়ে ১১টায় ৮টি দেশের হাইকমিশনার ও প্রতিনিধিরা কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ারসিমেট্রিতে সমবেত হন। প্রথমে পবিত্র কুরআন থেকে তেলোয়াত করা হয়। তারপর পবিত্র বাইবেল পাঠের পর ঢাকা হলিক্রস স্কলাষ্টিকের যাজক ফাদার ম্যাকডারমট প্রার্থনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। ব্রিটিশ সামরিক উপদেষ্টা লে. কর্ণেল স্টুট কার্টারমুল আর আইরিশের স্বাগত বক্তব্যের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। সমাধিক্ষেত্রের পশ্চিমে শ্বেতপাথরের হলিক্রসে প্রথমে কুমিল্লা সেনানিবাসের ভারপ্রাপ্ত জিওসি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ আহাম্মদ আলী পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। তখন বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। নিবর নিস্তব্দ হয়ে ওঠে পুরো সমাধিক্ষেত্র।

পরে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসনের নেতৃত্বে ব্রিটিশ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ভারত, ফ্রান্স, জার্মান ও ডেনমার্কসহ কমনওয়েলথভূক্ত ৮টি দেশের হাইকমিশনার ও প্রতিনিধিগণ হলিক্রসে পর্যায়ক্রমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার পশ্চিম-উত্তরে ময়নামতি সাবের বাজারের কাছাকাছি এক নয়নাভিরাম জায়গা জুড়ে অবস্থিত ময়নামতি ওয়ারসিমেট্রি। এ সমাধিক্ষেত্রে ১৩টি দেশের ৭৩৭জন যোদ্ধার মধ্যে ব্রিটেনের ৩৫০জন, কানাডার ১২জন, নিউজিল্যান্ডের ৪ জন, দক্ষিণ আফ্রিকার ১জন, পূর্ব আফ্রিকার ৫৬জন, পশ্চিম আফ্রিকার ৮৬জন, ভারতের ১৭২জন, বার্মার ১জন, দক্ষিণ রোডেশিয়ার ৩জন, বেলজিয়ামের ১জন, পোল্যান্ডের ১জন, জাপানের ২৪জন এবং বেসামরিক ১জনকে সমাহিত করা হয়। ময়নামতি ওয়ারসিমেট্রিতে চিরনিদ্রায় শায়িত সৈনিকদের মধ্যে মুসলিম ধর্মের ১৭২জন, বৌদ্ধ ধর্মের ২৪জন, হিন্দু ধর্মের ২জন এবং বাকিরা খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী।

(এইচকেজি/অ/নভেম্বর ০৭, ২০১৪)