স্পোর্টস ডেস্ক : বসুন্ধরা সিমেন্ট সিরিজের প্রথম টেস্টের জয়ই মুশফিকুর রহীমকে দেশের সেরা টেস্ট অধিনায়কের স্বীকৃতি এনে দিয়েছিল। এবার খুলনায় অধিনায়ক মুশফিক পেলেন তৃতীয় জয়ের দেখা। শুক্রবার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে ১৬২ রানে জিম্বাবুয়েকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টেস্টে দেশের এই সফল অধিনায়ক এবার টার্গেট করছেন জিম্বাবুয়েকে ধবলধোলাই করার। চট্টগ্রামে সিরিজের তৃতীয় টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে ১২ নভেম্বর। সেই ম্যাচেও জয়ই বাংলাদেশের টার্গেট থাকছে— শুক্রবার খুলনায় জানিয়ে দিয়েছেন মুশফিক। চট্টগ্রাম টেস্টে লক্ষ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই জয়।’ অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে সৌভাগ্যবানই মনে করেন মুশফিক। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই লাকি। কারণ অনেকেই বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। হয়তোবা আমার হাত ধরে তিনটা জয় এসেছে। এটা আসলে পুরোটা আমাদের দলগত সাফল্য। ভালো বোলিং, ভালো ক্যাচ ও ভালো রান না করলে এটা হয় না। পুরো ক্রেডিট বাংলাদেশ দলের। সাকিবের মতো আরেকটা খেলোয়াড় থাকলে কাজগুলো অনেক সহজ হয়ে যেত।’

স্বীকৃতি না পেলেও সিরিজ জয়ের ফলে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে জিম্বাবুয়েকে টপকে নয় নম্বরে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। টাইগার কাপ্তান বলেন, ‘র্যাঙ্কিং অবশ্যই একটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। কিন্তু এটা নিয়ে যদি বেশি চিন্তা করেন তাহলে চাপে অন্যরকম কিছু হতে পারে। প্রথম টার্গেট যেটা ছিল যে অন্তত কিছু অর্জন করা সেটা করেছি। যে কোনো কিছু অর্জনের চেয়ে সেটা ধরে রাখা খুব কষ্টকর। সেদিক থেকে বলব আমি যতটুকু জানি সামনের বছরে আমাদের মাটিতেই সব খেলা। যেহেতু আমাদের হোমে রেকর্ডটা ভালো সেটার যেন ধারাবাহিকতা থাকে। যত ভালো দলই আসুক না কেন আমরা যদি আমাদের মতো করে খেলতে পারি তাহলে বেশ ভালো টেস্ট রেকর্ডও হবে সামনের বছর।’
সময়ের বেড়াজালে পড়লেও ম্যাচে কখনই আত্মবিশ্বাস হারায়নি বাংলাদেশ। মুশফিকের কখনই মনে হয়নি ম্যাচটা ড্র হবে। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘কখনই মনে হয়নি যে ম্যাচটা ড্র হতে পারে। আমাদের একটা পরিকল্পনা ছিল যে, চাকাভা ও মাসাকাদজা প্রথম ইনিংসে ভালো ব্যাটিং করেছে। এরপর যারা আছে তাদের কেউই রানে নেই। আমাদের শুধু একটা পরিকল্পনা ছিল যে ওদের মধ্যে যে কোনো একটি উইকেট নিতে হবে। তার আগে পরিকল্পনা ছিল যে টেলর ও হ্যামিলটনের যে কোনো একটি উইকেট নিতে হবে। টেলর আউট হওয়ার পর ওদের মধ্যে একটা জুটি হয়েছিল তখনই আমরা বলছিলাম যে একটা উইকেট লাগে যে কোনো ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য। লিখন ওই বলটা খুবই ভালো করেছে। ওই উইকেট পাওয়ার পরই বুঝে যাই যে জায়গামতো বল করলে অনেক কিছুই হবে। সাকিব যে প্রান্ত থেকে বল করছিল সেখানে বল লাফিয়ে উঠছিল। ওই এক উইকেট পাওয়ার পরই আমাদের টিম স্পিরিটটা আরও বেড়ে যায়। আমাদের কখনও মনে হয়নি যে ড্র হবে।’
শুক্রবার সকালে ১৯.৫ ওভার খেলার পর স্কোরটা নিরাপদ জায়গায় নিয়েই দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ। মুশফিক বলেন, ‘উইকেটে যে বেশি সহায়তা ছিল তা নয়। আপনাকে তো আগে একটা নিরাপদ অবস্থায় যেতে হবে। তারপর আপনাকে জেতার জন্য কত রান বা কত ওভার লাগে তার হিসাব করতে হয়। ৭৫ ওভার হলে খুবই ভালো হতো। তখনও রান তিনশ ছাড়িয়ে যায়নি। তাই আমরা ভেবেছিলাম অন্তত ৩২০ রান হলে আমরা ইনিংস ঘোষণা করব। তারপরও মনে হয়েছিল ৫টা ওভার হয়তো শর্ট হয়েছে। তারপরও আমাদের বিশ্বাস ছিল সাকিব, তাইজুল, লিখন ভালো জায়গায় বল করলে যে কোনো কিছু সম্ভব। শুরুতে উইকেট নেয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমার মনে হয় লাঞ্চের আগে আমরা যে আধাঘণ্টা সময় পেয়েছিলাম এটা খুব কাজে লেগেছে। এই সময়ে আমরা দুটি উইকেট নিতে পেরেছি। সাকিব, তাইজুল খুব ভালো বল করতে পেরেছে।’

(ওএস/এইচআর/নভেম্বর ০৮, ২০১৪)