স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অরগানাইজেশনের (আইএমও) ক্যাটাগরি ‘সি’ কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হওয়াকে বিজয়ের মাসে বাংলাদেশের আরেকটি বড় বিজয় বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

রবিবার (৩ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। আইএমও নির্বাহী পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ ক্যাটাগরি ‘সি’-তে জয়লাভ উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

তিনি বলেন, বিজয়ের মাসে এটি আমাদের একটা বড় অর্জন। ১৭৪টি দেশ নিয়ে আইএমও সংস্থা। এখানে আমরা দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেছি নির্বাহী পরিষদের সদস্য হতে। আমরা এর আগে বি-ক্যাটাগরিতে কাউন্সিলর হিসেবে ছিলাম, তখন সেটা নির্বাচিত না, সিলেকশনের মাধ্যমে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইএমও এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল নির্বাচনে বাংলাদেশ ক্যাটাগরি-‘সি’ তে জয়লাভ করেছে। গত ১ ডিসেম্বর জাতিসংঘের শিপিং সংক্রান্ত বিশেষায়িত এ এজেন্সির ৩৩তম অধিবেশনে আইএমও কনভেনশন ১৬ ও ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ৩টি ক্যাটাগরিতে কাউন্সিল সদস্য পদে গোপন ব্যালটে ভোটের মাধ্যমে ২০২৪- ২০২৫ সালের জন্য ক্যাটাগরি ‘এ’ ‘বি’ ও ‘সি’-তে ৪০ সদস্যের নতুন আইএমও কাউন্সিল সদস্যদের নির্বাচিত করা হয়।

ক্যাটাগরি-‘এ’: আন্তর্জাতিক শিপিং পরিসেবা প্রদানে সর্বাধিক আগ্রহী এমন ১০টি দেশ নির্বাচিত হয়েছে- গ্রিস, ইতালি, জাপান, চীন, নরওয়ে, পানামা, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, লাইবেরিয়া।

ক্যাটাগরি-‘বি’: আন্তর্জাতিক সমুদ্রবাহিত বাণিজ্যে সর্বাধিক আগ্রহী এমন ১০টি দেশ ক্যাটাগরি-বি তে নির্বাচিত হয়েছে : ইন্ডিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ব্রাজিল, স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, জার্মানি, সোমালিয়া।

ক্যাটাগরি-‘সি’র বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন ‘এ’ ও ‘বি’ ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত নয় অথচ যাদের সামুদ্রিক পরিবহন বা নেভিগেশনে বিশেষ আগ্রহ রয়েছে এবং যাদের কাউন্সিলে নির্বাচন বিশ্বের সব প্রধান ভৌগলিক অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করবে এমন ২০টি দেশ ক্যাটাগরি-‘সি’ তে নির্বাচিত হয়েছে। কাউন্সিল নির্বাচনে ‘সি’ ক্যাটাগরি সদস্য নির্বাচনে মোট ২৫টি দেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ১৬৮টি বৈধ ভোটের মধ্যে বাংলাদেশ ১২৮টি ভোট পেয়ে ১৬তম হয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করে। এটি বিজয়ের মাসে বাংলাদেশের আরেকটি বড় বিজয়।

এ অর্জন বাংলাদেশের বৈশ্বিক মেরিটাইম সেক্টর এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক সমর্থনের প্রমাণ জানিয়ে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এ বছর জুনে আমরা হংকং কনভেনশন অনুসমর্থন করি। এতে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম মানদণ্ড বজায় রাখতে বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে, যা এ নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এ নির্বাচন মেরিটাইম সেক্টরকে সুগঠিত, সুশৃঙ্খল এবং সংগঠিত করবে; যার মাধ্যমে বাংলাদেশ জাহাজ নির্মাণ, জাহাজ পরিচালনা এবং জাহাজ পুনর্ব্যবহার সেক্টরের দক্ষতা বৃদ্ধি করে বিদেশে খ্যাতি অর্জন করবে।

সি ক্যাটাগরিতে জয়লাভ করা ২০টি দেশের রয়েছে-সিঙ্গাপুর, মালটা, সৌদিআরব, তুরস্ক, মিশর, মেক্সিকো, ফিলিপাইন, চিলি, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, বাহামা, সাইপ্রাস, মরোক্কো, ডেনমার্ক, কাতার, বাংলাদেশ, কেনিয়া, পেরু, ফিনল্যান্ড ও জ্যামাইকা।

গত পাঁচ বছরে নৌ মন্ত্রণালয় যে কাজ করেছে, তাতে আপনি সন্তুষ্ট কি না-জানতে চাইলে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের সন্তোষ প্রকাশের জায়গাটা আরও অনেক বড় ছিল। কিন্তু আমরা যে গতিতে শুরু করেছি, সেটা আমরা পরিনি। কারণ আমাদের বড় ধরনের একটা ধাক্কা মোকাবিলা করতে হয়েছে। কেবল বাংলাদেশই না, সমস্ত পৃথিবীতে চলছে। ইউরোপের অনেক ধনী দেশও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। অনেক দেশে খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। সেই জায়গা থেকে আমাদের তেমন কোনো পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়নি। এটি হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে বড় সফলতা।

তিনি আরও বলেন, আপনারা বলতে পারবেন, যেসব পদক্ষেপ আমরা নিয়েছিলাম, সেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এত সংকটের মধ্যেও আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৩, ২০২৩)