ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদীতে পদ্মার জেগে ওঠা চরে পেঁয়াজ চাষ করে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। উর্বর পলিমাটিযুক্ত জমিতে পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের আশায়  স্বপ্ন বুনছেন চরাঞ্চলের কৃষক। পদ্মার বিস্তীর্ণ চর এলাকায় যেদিকে চোখের দৃষ্টি সীমানায় শুধু দেখা মেলে পেঁয়াজের আবাদ। তবে এবারে পেঁয়াজ চাষে খরচ হয়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশী। পেঁয়াজ আমদানি হলে বাজারে দরপতন হবে বলে কৃষকরা আশঙ্কা।

পদ্মার পানি এবারে আগে নেমে যাওয়ায় চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ আগাম রোপণ করা হয়েছে। পেঁয়াজের বাম্পার ফলন ও দাম ভালো পাবেন বলে আশা করছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। বাজারে পেঁয়াজের সংকটের কারণে বাজারে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হওয়ায় চরাঞ্চলের কৃষকরা অন্যান্য ফসলের চেয়ে পেঁয়াজ চাষে বেশি আগ্রহী। অনুকূল আবহাওয়া এবং রোগবালাই কম থাকায় এবারে পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চরের কৃষক। ভারতীয় পেঁয়াজের চেয়ে দেশি পেঁয়াজের গুণগতমান ভালো। তাই দাম বেশি পাওয়ার প্রত্যাশা চাষিদের। ন্যায্য বাজার মূল্যের নিশ্চয়তা পেলে চরে পেঁয়াজ চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, একসময়ের উত্তাল পদ্মা নদীর জেগে ওঠা চরে আগাম জাতের চাষ করা মূলকাটা পেঁয়াজের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চরাঞ্চলের চাষীরা। বিপুল সংখ্যক ভোক্তা চাহিদাসম্পন্ন অর্থকরী মসলা জাতীয় ফসল হওয়ায় পেঁয়াজ চাষ করে চরের কৃষকরা বছরের অর্থনৈতিক চাহিদা মিটিয়ে থাকেন। লক্ষীকুন্ডা ও সাঁড়ার চর এলাকা এবং ছলিমপুর ঘুরে দেখা যায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজ উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঈশ্বরদীতে এবারে প্রায় ৭৮৫ হেক্টরেরও বেশি জমিতে মূলকাটা পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। আর কয়েকদিন পরেই স্বপ্নের অর্থকরী সোনালী ফসল পেঁয়াজ ঘরে তুলবেন চাষীরা। স্বাবলম্বি হওয়ার আশায় পেঁয়াজের পরিচর্যা নিয়ে কর্মব্যস্ত তারা।

চাষিরা জানান, বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে এ পেঁয়াজ চাষাবাদ শুরু হয়। ডিসেম্বরের শেষের দিকে ও জানুয়ারির শুরুতে জমি থেকে পেঁয়াজ তুলে সেগুলো বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করা হয়। পেঁয়াজ চাষি মিজানুর রহমান পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে জানিয়ে বলেন, বর্তমান বাজার মূল্য স্থিতিশীল থাকলে লাভবান হবে কৃষক। পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকলে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হব। দাম ভাল থাকলে আগামীতেও চাষিরা পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হবেন। এতে দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি পূরণ হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিতা সরকার জানান, চরাঞ্চলে বন্যা-পরবর্তী ফসল হিসেবে ৭৮৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। এবারে উৎপাদনের ল্ক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশা পোষণ করেন।

(এসকেকে/এসপি/ডিসেম্বর ০৫, ২০২৩)