মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : গত বৃহস্পতিবার পর্যন্তও জেলা শহর ও শ্রীমঙ্গলে প্রতি কেজি পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হয়েছে ৯৬ থেকে ৯৮ টাকা কেজি দরে। তবে শুক্রবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভারতের পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের ঘোষণার খবরের সাথে সাথে পাল্টে যায় দৃশ্যপট।

ওই দিনই একলাফে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে থাকেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের দাবী পাইকারদের কাছ থেকে বেশি দামে পেঁয়াজ ক্রয় করার কারণেই এই দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বাজার জুড়ে পেঁয়াজের এই অস্থিরতার কারণ হিসেবে সাধারণ মানুষ দায়ী করছেন অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন ও ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার অধিদপ্তরের জোড়ালো মনিটরিংও দাবী তাদের। শুক্রবার পেঁয়াজের বাজারে চরম অস্থিরতার খবরে সামজিক মাধ্যমেও শুরু হয় তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতার বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) শহরের পশ্চিমবাজার ঘুরে কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজিতে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। ওই বাজারের বিসমিল্লাহ স্টোরের স্বত্তাধিকারী আরিফুল ইসলাম দাবী করেন, প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৬০ টাকা করে ক্রয় করা হয়েছে। যা খুচরা বিক্রি করতে হবে অন্তত ১৭০ টাকা কেজি দরে। জেলার সবচেয়ে বড় পেঁয়াজের পাইকারী বাজার শ্রীমঙ্গল। সেখানকার পাইকারী আড়ৎ ইমান ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী আলমগীর হোসেন এর দাবী বাজারে অতিরিক্ত দাম এর কারণে পেঁয়াজ আসেনি। তবে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রির বিষয়টি স্বীকার করেন ওই ব্যবসায়ী।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম জানান, পেঁয়াজরে বাজারে দাম বাড়ার বিষয়টি নিয়ে ইতি মধ্যেই শ্রীমঙ্গলসহ জেলার সবগুলো উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয়েছে। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।

এদিকে বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির খবরে অভিযানে নেমেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরও। প্রতিষ্ঠানটির মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো: শফিকুল ইসলাম এর নেতৃত্বে র‌্যাব-৯ ফোর্সের সহযোগিতায় শনিবার দুপুরে জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার সেন্ট্রাল রোডসহ বিভিন্ন জায়গায় পেঁয়াজের পাইকারি বাজারে নামে। এসময় মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রি সহ বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে সেন্ট্রাল রোডে অবস্থিত মেসার্স পাল ভান্ডারকে ২০ হাজার টাকা ও মেসার্স আমির ট্রেডার্সকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয় এর সহকারী পরিচালক মো: শফিকুল ইসলাম জানান, আমাদের লোকবল কম থাকার পরও আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি। আজ বন্ধের দিনেও আমরা মাঠে আছি।

(একে/এএস/ডিসেম্বর ০৯, ২০২৩)