আবীর আহাদ


গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে জনকল্যাণমূলক আদর্শ ও কর্মসূচিকে ভিত্তি করে একটি রাজনৈতিক দল গড়ে ওঠে। বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে সেই আদর্শের নাম মুক্তিযুদ্ধ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যান্য রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে বিএনপি নামক দলটি মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার ও অবমূল্যায়ন করে সাবেক পাকিস্তানি ধ্যানধারণা, তথা সাম্প্রদায়িকতাকে পাথেয় করে এদেশে রাজনীতি করে আসছে। ফলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবীত জনগণ নয়, পাকিস্তানী চেতনার রাজাকার আলবদর আলশামস শান্তি কমিটিসহ দুর্নীতিবাজ লুটেরা ও ধর্মান্ধ জঙ্গিরাই হলো বিএনপির মূল সমর্থক ও চালিকাশক্তি। গণতন্ত্রের নামাবলীর অন্তরালে স্বৈরতান্ত্রিকতাই হলো তাদের অন্যতম আদর্শ। আর তাদের রাজনৈতিক কৌশলের নাম ষড়যন্ত্র। ফলশ্রুতিতে তাদের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে ষড়যন্ত্রের আশ্রয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা। এ লক্ষ্যে তারা মুক্তিযুদ্ধের আন্তর্জাতিক বিরোধীশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ধন পাচ্ছে। বিএনপি মনে করছে, আওয়ামী লীগ সরকারকে হঠিয়ে দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদেরকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে! আহাম্মক কাকে বলে!

এ জন্যই তারা গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও নির্বাচনে আগ্রহী নয়। তাই তো দেখা যায়, তারা বিগত ২০১৪, ২০১৮ ও চলতি ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বচন থেকে দূরে রয়েছে। তারা ভালো করেই জানে, যেহেতু রাজনৈতিক দল হিসেবে সাধারণ জনগণের মধ্যে তো বটেই, এমনকি সাংগঠনিকভাবেও তাদের দল চরম দুর্বল, সেহেতু স্বাভাবিক রাজনৈতিক তৎপরতা পরিহার করে তারা আলকায়দার লাদেনীয় জঙ্গিদের মতো পর্দার অন্তরালে থেকে লাশের রাজনীতিসহ নানান অন্তর্ঘাতমূলক ও ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি দিয়ে গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও দেশকে অস্তিতিশীল করছে। এ অবস্থায় বিএনপিকে রাজনৈতিক দল বলা যায় না। তারা জঙ্গি সংগঠন হিশেবে পরিগণিত হচ্ছে। মূলত: বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে ধ্বংস করে পাক-মার্কিনীদের একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়ার ঠিকাদারের ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জননেত্রী শেখ হাসিনা ও সতেরো কোটি বাঙালির প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে ধ্বংস করা যাবে না। সুতরাং নিজেদের ও জাতীয় স্বার্থে বিএনপিকে স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে ফিরে আসা উচিত বলে মনে করি।

লেখক : মুক্তিযোদ্ধা লেখক ও গবেষক।