স্টাফ রিপোর্টার : দেশে প্রতি ১১শ লোকের জন্য গড়ে হাসপাতালে মাত্র একটি শয্যা রয়েছে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান অনুযায়ী অনেক কম। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এক আলোচনা সভায় এ কথা জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন, আমাদের হাসপাতাল ও ক্লিনিক দরকার। হাসপাতালের বেডও (শয্যা) দরকার। আমাদের যে পরিমাণ রোগী হয়, অনেক রোগী ফ্লোরে থাকেন। এটা অস্বীকার করতে পারবো না। স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে, মানুষের সচেতনতাও বেড়েছে। পাশাপাশি সেবার মান বেড়েছে, ফলে মানুষ আগ্রহসহ সেবা নিতে আসে।

গত সাত-আট বছরে হাসপাতালের বেড দ্বিগুণ হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এখন প্রায় ৭০ হাজার বেড রয়েছে দেশে। প্রাইভেট সেক্টরেও এমন ৭০-৮০ হাজার বেড। মোট প্রায় দেড় লাখ বেড আছে। তারপরও আমরা সব রোগীকে বেডে রাখতে পারি না। আমাদের জনসংখ্যা অনুযায়ী গড়ে ১১০০ জনের জন্য একটি বেড রয়েছে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান অনুযায়ী অনেক কম।

তিনি বলেন, ইউনিভারসেল হেলথ কভারেজ আমাদের সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়টি আমি খুবই গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এটা বিভিন্ন দেশে বাস্তবায়িত হচ্ছে, অনেক দেশে হয়েছে। আমরাও এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের দেশে ইউনিভারসেল হেলথ কাভারেজ বাস্তবায়ন হয়নি। তবে ইন্ডাইরেক্টলি অনেক কাজ করছিও। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনেক অর্জন রয়েছে, সব অর্জন দিয়ে ইউনিভারসেল হেলথ কাভারেজ অর্জন হবে। আমাদের প্রাইমারি হেলথ কেয়ার ইউনিভারসেল হেলথ কাভারেজের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

জাহিদ মালেক আরও বলেন, সেবা দিতে হলে ডাক্তার-নার্স দরকার। তাদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা দরকার। ১০০ এর মতো মেডিকেল কলেজ রয়েছে। যেখানে সিট আছে ১২০০০টি। আমি ২৩০০ সিট বাড়িয়েছি, যেন আমাদের ছেলেমেয়ে বিনামূল্যে পড়তে পারেন। সেবা দিতে পারেন। এসব ছাড়া সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা সম্ভব নয়।

স্বাস্থ্য খাতের চ্যালেঞ্জের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য খাতে জনবলের চ্যালেঞ্জ আছে। অর্ধেক জনবল নিয়ে আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি এবং অর্ধেক জনবল নিয়েই বিভিন্ন অর্জন করে যাচ্ছি। আমাদের স্বাস্থ্য খাতে ফান্ডিং চ্যালেঞ্জ আছে। জিডিপির এক শতাংশ আমরা স্বাস্থ্য খাতে ব্যবহার করি। এটা অন্যান্য দেশের থেকে অনেক কম। অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্স একটা বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের জন্য। প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারিতেও চ্যালেঞ্জ আছে। ৫০ শতাংশ ডেলিভারি এখনো বাড়িতে হয়। ফলে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার কমছে না। সিজারিয়ান সংখ্যাও অনেক বেশি, এটাও কমাতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার খুরশিদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটো মিয়া প্রমুখ।

(ওএস/এএস/ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩)