শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত দিনাজপুরে জেঁকে বসেছে শীত। বেড়েছে ঠান্ডার তীব্রতা। ঘন কুয়াশায় ঢেকেছে জনপদ। শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ঠান্ডার জবুথবু অবস্থা মানুষসহ প্রাণিকুলের। হাড়কাঁপা শীতে বেড়েছে শীত জনিত রোগের প্রকোপ।
 

বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৬ টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৯ টা কমে ১০ দশমক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে তাপমাত্রা।

গতকাল বুধবার সকাল ৯ টায় জেলার তাপমাত্রা ছিলো ১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলায় একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে ৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টায় জেলায় ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যে কোনো সময় শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়বে দিনাজপুর এমন আশংকা করছেন আবহাওয়াবিদরা।

চলতি মৌসুমে দিনাজপুরে আজ বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলে জানিয়েছে,আবহাওয়া অধিদপ্তর।

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া সহকারী আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, সকালে জেলার সর্বনিম্ন তামাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আগামী কয়েকদিন আরও তাপমাত্রা কমার আশঙ্কা করছেন তারা।

রবিবার বা সোমবার জেলায় মৃদু শৈত প্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ ডিসেম্বর মাসে জেলায় দুই/তিনটি শৈত প্রবাহ বয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় হিমেল বাতাস। আর তার সঙ্গে যোগ হয় ঘন কুয়াশা।দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় সড়ক-মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে। তারপরও বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা।

হাড়কাঁপা শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষজন।

আয় উপার্জনে পড়ছে ভাটা। শীতের কারণে ঠিকভাবে কাজে যেতে পারছেন না অনেক শ্রমজীবী মানুষ। পেটের তাগিদে মোটা জামাকাপড় আর কেউ কাথা কম্বল শরীরে জড়িয়ে জেলা শহরের সষ্টিতলায় শ্রম বাহারে আসছেন। কিন্তু, বেলা বাড়ার পরেও অনেকে কাজ না পেয়ে শ্রম বাজারে বসে থেকে বাড়ি ফিরছেন।

কাজের আশায় সষ্টিতলার শ্রম বাজারে অপেক্ষামান বিরল উপজেলার পলাশবাড়ী এলাকার আলামিন আলী জানালেন,বয়স বেড়ে যাওয়ায় সিকালে ঠান্ডায় বাড়ি থেকে বের হতে পারেননি। দেরিতে আসায় তিনি কাজ পায়নি।

একই কথা জানালেন দক্ষিন কোতয়ালীর মোস্তাকিম।

তিনি বলেন,'কাজে না! আসিলে উপার্জন হয় না। খালি হাতে বাড়ি ফিরিবা হয়। আবার এই ঠাণ্ডায় সকালে বাড়ি থেকে বাইর হওয়াটাও মুশকিল। হামার গরিবের কোন উপায় নাই।

হামার মতো খেটে খাওয়া মানুষের জন্য এখন খুবই কষ্টকর।'

এদিকে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বড় ময়দানের হকারর্স মার্কেটসহ বিভিন্ন দোকান,বিপণী-বিতানে বিক্রি বেড়েছে গরম কাপড়ের।
ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের হার বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি পরিমাণে আক্রান্ত হচ্ছেন। দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল হাসপাতালসহ হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপও বেড়েছে।

অন্যদিকে আলু এবং আগাম বীজতলা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন,কৃষক। কুয়াশা বেশি হওয়ায় ক্ষেতে থাকা আলু এবং আগাম রোপণ করা বীজতলার ক্ষতি হচ্ছে। বেশি শীত পড়লে আলুর গড়া পঁচা ছত্রাক রোগ এবং বীজতলা চারা বিবর্ণ হয়ে যাবে। এমনটাই আশংকা প্রকাশ করেছেন,বিরল উপজেলার পুরিয়া গ্রামের আদর্শ কৃষক মো.মতিউর রহমান।

(এসএএস/এএস/ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩)