বিশেষ প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : 'মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বন্ধ কইরা দেন! ভাতা বন্ধ কইরা দিলেই দেখবেন, দেশে আর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বাড়বে না! কারণ, অনেক অমুক্তিযোদ্ধাই লাখ লাখ টাকা 'ঘুষ' দিয়া আজ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম লেখাইতাছে। মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার পর প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা কইরা 'মুক্তিযোদ্ধা ভাতা' পাইয়া এক বছরের মধ্যেই হেরা (অমুক্তিযোদ্ধা) তাদের পূঁজি (প্রদেয় ঘুষ) উঠাইয়া নেয়!’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আজ শনিবার দুপুরে বিজয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত 'মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা' অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে প্রচন্ড ক্ষোভের সঙ্গে উপরোক্ত কথাগুলো বললেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার, কণিকাড়া গ্রামের যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম শাহন।

এসময় তিনি উত্তেজিত কণ্ঠে বলেন,'ভূয়া মুক্তিযোদ্ধারা যখন নিজেদেরকে 'মুক্তিযোদ্ধা' পরিচয় দিয়া আমাদের সামনে দিয়া বুক ফুলাইয়া হাইট্যা যায়, তখন মনডা চায়, দু:খে কষ্টে মইরা যাই!
অনুষ্ঠানে আগত ৯০ বছর বয়স্ক যুদ্ধাহত আরেক প্রবীণ বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিবপুরের সারপাড়ের বাসিন্দা মোছাহিদ বারু মিয়া তাঁর বক্তব্যে বলেন,'জীবন বাজি রাইখ্যা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন কইরা এখন দেখি মুক্তিযোদ্ধার খেতাব লাইয়া অনেকে 'ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা'ই মুক্তিযোদ্ধার সরকারি ভাতা নেয়! এই দু:খ আমরা কই রাখবো, কন?

নবীনগর পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি, আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা বোরহান উদ্দিন আহমেদ নসু বলেন,'কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচ বছর আগে নবীনগরে দৃষ্টিনন্দন মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও, কেন সেটি আজও উদ্বোধন হচ্ছে না, সেটি সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে বিনয়ের সঙ্গে জানতে চাই।'

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামীমের সভাপতিত্বে মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামীলীগের প্রবীণ নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা নিয়াজ মোহাম্মদ খান, উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান, পৌর মেয়র এডভোকেট শিব শংকর দাস, এসি ল্যান্ড মাহমুদা জাহান, ওসি মাহবুব আলম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক, জেলা পরিষদ সদস্য মো. নাছির উদ্দিন প্রমুখ।

(জিডি/এসপি/ডিসেম্বর ১৬, ২০২৩)