বিশেষ প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : মারামারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় সাফিনুর ইসলাম (৩৫) নামে এক কাপড় ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। হামলাকারীরা ব্যবসায়ী সাফিনুরকে মাংস কাটার ধারালো অস্ত্র (টাকশাল) দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে খুন করেছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন খোদ্ হামলাকারী  দুইজনও। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের বাঘাউড়া গ্রামে মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে ময়না তদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ জেলা মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ ইতিমধ্যে হামলাকারী আহত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে।

নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, দু'দিন দিন আগে এলাকার নোয়াগাঁও গ্রামের অলেক শাহ্ এর ওরশে বাঘাউড়া গ্রামের কাপড় ব্যবসায়ী সাফিনুর ইসলামের ছোট ভাই রুবেল মিয়াকে তুচ্ছ ঘটনায় মারধর করেন একই গ্রামের (বাঘাউড়া) কাইয়ুম মিয়ার ছেলে ফয়জুর রহমান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ওই মারামারি ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে রুবেলকে সঙ্গে নিয়ে তার বড় ভাই ব্যবসায়ী সাফিনুর উত্তেজিত অবস্থায় ফয়জুর রহমানকে মারার জন্য ফয়জুরের বাড়িতে যায়। সেসময় ফয়জুর ও তার বড় ভাই মাংস বিক্রেতা (কসাই) আবদুর রহমানের সঙ্গে সাফিনুরের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারি শুরু হয়। এসময় আবদুর রহমান ঘর থেকে মাংস কাটার ধারালো অস্ত্র (টাকশাল) এনে সাফিনুরের ওপর নৃশংসভাবে হামলা চালিয়ে তাকে (সাফিনুর) কুপিয়ে মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত করে। এসময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক পক্ষের সাফিনুর ইইসলাম ও প্রতিপক্ষের আবদুর রহমান ও তার ভাই ফয়জুরর রহমান গুরুতর আহত হন।

পরে আহত তিনজনকেই নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে, কর্তব্যরত চিকিৎসক সাফিনুরকে মৃত ঘোষণা করেন।

আর বাকী দুজনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে পুলিশ প্রহরায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুরুতর আহত দুই ভাই আবদুর রহমান ও ফয়জুর রহমানকে পুলিশ গ্রেফতার করে।

নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রধান (ইউএইচএ) ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, 'হাসপাতালে আনার আগেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে সাফিনুর পথেই মারা যান।'

নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম বুধবার সকালে এ প্রতিবেদককে বলেন, 'লাশ উদ্ধার করে জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসাধীন দুই ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে পরবর্তী যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। রক্তমাখা ধারালো অস্ত্রটি (টাকশাল) উদ্ধার করা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।'

(জিডিএ/এএস/ডিসেম্বর ২০, ২০২৩)