মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : আজ ভয়াল সেই ২০ ডিসেম্বর। ইতিহাসের পাতায় নির্মম বেদনাদায়ক ওই দিনটিকে মৌলভীবাজারবাসী স্থানীয় শহীদ দিবস হিসেবেই পালন করে আসছেন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার চারদিন পর ২০ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ফেলে যাওয়া মাইন বিস্ফোরনে ২৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা যান। 

বুধবার (২০ ডিসেম্বর) দিবসটি উপলক্ষে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শহীদদের নাম সম্বলিত স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

এসময় সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত ও শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ড.উর্মি বিনতে সালাম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মিছবাহুর রহমান, পুলিশ সুপার মো: মনজুর রহমান (পিপিএম বার), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) প্রভাংশু সোম মহান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন চৌধুরী ও সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো: জামাল উদ্দিনসহ প্রমূখ। বরাবরের মতো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন মাসুদ।

সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো: জামাল উদ্দিন বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে এসে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপনকৃত মুক্তিযোদ্ধা হেড কোয়ার্টারে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল এখানে কিছুদিন বিশ্রামের পর নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যাবেন। কিন্তু সেই সুযোগ আর কারও হয়নি। ১৯৭১ সালের ২০ ডিসেম্বর দুপুর বেলা আকষ্মিক বিদ্যালয় ভবনে মাইন বিস্ফোরণ ঘটলে মুহূর্তেই সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। মাইন বিস্ফোরণে ক্যাম্পে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে বিভিন্ন স্থানে ছিটকে পড়ে। এসময় অর্ধ-শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা হতাহত হন।

তিনি বলেন, পরে মুক্তিযোদ্ধাদের ছিন্নভিন্ন দেহ জড়ো করে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে সমাহিত করা হয়। এরপর থেকেই মৌলভীবাজারবাসী ২০ ডিসেম্বর স্থানীয়ভাবে শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে আসছেন।

(একে/এসপি/ডিসেম্বর ২০, ২০২৩)