স্পোর্টস ডেস্ক  : আড়ালে-আবডালে গুঞ্জন ছিল খুলনা টেস্টেই বাংলাদেশ দলে যুক্ত হবেন ইমরুল কায়েস। তামিম ইকবালের ইনজুুরি সেরে যাওয়ায় খুলনাতে তাই দেখা যায়নি এই বাঁহাতি ওপেনারকে। তবে টানা দুই টেস্টে শামসুর রহমানের ব্যাটিং ব্যর্থতা দুয়ার খুলে দিয়েছে ইমরুলের জন্য। ১২ নভেম্বর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হতে চলা তৃতীয় টেস্টের দলে ডাক পেয়েছেন ১৮ টেস্ট খেলা এই ওপেনিং ব্যাটসম্যান।

শরীরে বিশেষ এক ধরনের রোগে ভুগছেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের মাঝপথে ওই রোগের কারণে দল থেকে বাদ পড়েন। তারপরও চিকিত্সার কাজে ব্যস্ত ইমরুল ছিটকে পড়েন জাতীয় দল থেকে। ভাগ্যক্রমে বিসিবি একাদশের হয়ে ভারত সফরে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে ওয়ানডে ম্যাচে সেঞ্চুরিই আবার নির্বাচকদের নজরে নিয়ে আসে ২৭ বছর বয়সী এ ক্রিকেটারকে। জাতীয় দলে ফেরার সুযোগটা কাজে লাগাতে চান তিনি চট্টগ্রাম টেস্টে। লাল বলে অনেকদিন না খেললেও ইমরুলের টার্গেট নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলা। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিটা ইমরুল পেয়েছিলেন জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। পয়া ভেন্যুতে তাই ভালো করার বিষয়ে আশাবাদী তিনি।
গতকাল বিকালে সাগরিকায় অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল। অনুশীলন শেষে ইমরুল কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। ওয়ানডে ম্যাচে সেঞ্চুরি করলেও ইমরুল এখন আছেন টেস্ট দলে। সেক্ষেত্রে টেস্ট খেলার আত্মবিশ্বাস কতটা রয়েছে— এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওয়ানডে ক্রিকেট ও টেস্ট ক্রিকেট পুরোপুরি ভিন্ন। আমার মনে হয়, আমি যেখানেই খেলি না কেন আমাকে মানিয়ে নিতে হবে। আমি শেষবার টেস্ট খেলেছিলাম সেন্ট ভিনসেন্টে। আমি অসুস্থ হয়ে বাদ পড়ি। ভারতে ওই সেঞ্চুরির চিন্তাও আমি করিনি। সেটা এখানেও খুব কাজে লাগবে না। আমি দলে আসা-যাওয়ার মাঝে আছি। আমাকে মানিয়ে নিতে হবে।’ তামিমের সঙ্গী হয়ে টানা দুই টেস্টেই সুবিধা করতে পারেননি শামসুর রহমান। সেখানে চট্টগ্রামে ইমরুলের জন্য কঠিন হয়ে গেল কি না প্রশ্নে এই বাঁহাতি ওপেনার বলেন, ‘ওপেনিংয়ে অনেক পরিবর্তন হয় বলে এটি অনেক চ্যালেঞ্জিং। প্রতিটি দেশেই উদ্বোধনী জুটি নিয়মিত পরিবর্তন হয়। এক জায়গায় কেউ বেশিদিন স্থির থাকতে পারে না। আমার মনে হয়, ধারাবাহিকভাবে খেলার সুযোগ পেলে কেউ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে।’
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে গত বছর এই মাঠেই সেঞ্চুরি করেছিলেন ইমরুল। এবারও সেই পারফরম্যান্স আত্মবিশ্বাস জোগাবে তাকে। প্রথম ইনিংসে ১১৫ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫ রান করেছিলেন মেহেরপুরের ছেলে ইমরুল। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে সব সময় ভালো খেলেছি। বিশ্বকাপে ভালো করেছি। এ মাঠে শেষ সিরিজেও আমি ভালো খেলেছি। সেই আত্মবিশ্বাসটা থাকবে। আশা করি জিম্বাবুয়ে সিরিজে এটা কাজে লাগাতে পারব।’ দলে মাত্রই সুযোগ পেলেও ইমরুলের চোখে জিম্বাবুয়েকে ধবলধোলাই করার লক্ষ্যই অটুট আছে। দুই টেস্ট জিতে বাংলাদেশ সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে আছে। ইমরুল বলেন, ‘অবশ্যই যখন একটা দল ভালো খেলে তখন তাদের চেষ্টা থাকে ৩-০ তে জেতার। আমাদের টার্গেটও একই। আশা করি আমরা সেটা করতে পারব।’ দলে টিকে থাকার উপায়টাও এই বাঁহাতির ভালোই জানা আছে, ‘আমি মনে করি, আমার দলে থাকার একটাই উপায় আছে তা হলো আমাকে ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। না হয় আমি টিকে থাকতে পারব না। আমাকে সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’
পারফরম্যান্সের বাইরে শুধু শারীরিক অসুস্থতার কারণে দল থেকে বাদ পড়া অনেক হতাশার জানিয়ে ইমরুল বলেন, ‘দল থেকে বাদ পড়লে আবার ফিরে আসা কঠিন হয়ে পড়ে। মানিয়ে নেয়াও আবার সমস্যা হয়ে যায়। আমি মনে করি, যে সুযোগটা আমি পেয়েছি এখন এটাই সেরা সুযোগ আমার জন্য। আমার সামর্থ্যের সেরাটুকু দিয়ে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’ প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়েও ইমরুলের চেনা অনেকদিনের। তাদের মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে নিজের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে চান তিনি। বললেন, ‘লক্ষ্য প্রথমে উইকেটে মানিয়ে নেয়া এবং পরে নিজের খেলাটা খেলা। অনেকদিন লাল বলে আমি খেলিনি। তাই আগে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করব। তারপর স্বাভাবিক খেলা খেলব।

(ওএস/এইচআর/নভেম্বর ১০, ২০১৪)