নীহার রঞ্জন কুন্ডু, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন এর একটি জনবহুল এলাকা ৩০ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা নজরুল ইসলাম। যিনি দীর্ঘ ৩৯ বছর ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত অবস্থায় যে বেতন পেতেন সেখান থেকে ৬ জনের যৎ সামান্য খরচের পরে অল্প অল্প জমা করে পিছিয়ে পরা মানুষের কল্যাণে ব্যয় করেন। যেমন কারো মেয়ে বিবাহ, কারো ছেলে মেয়ের পড়াশুনা, কারো ঘড়ে খাবার নাই। এরই মধ্যে নজরুল সেখানে হাজির। জমানো টাকা থেকে তিনি তার ওয়ার্ড বাসীর মধ্যে থেকে নিন্মবিত্তের ঘড়ে পৌছে দিতেন এই সব সহযোগিতা।

হউক পার্বন/ঈদ/ পূজা বা অন্য কোন অনুষ্টান নিজের জমানো টাকায় তিনি গরীবের ঘড়ে সামান্য হলেও পৌঁছে দিতে ভূল করতেন না সহযোগিতার হাত। শীতকালে তিনি নিজের জমানো টাকায় শীতবস্ত্র বিতরণে কার্পন্য করেন নাই। শীতের মধ্যে তিনি শীতবস্ত্র নিয়ে গভীর রাতে বাড়ী বাড়ী গিয়ে প্রায় প্রতিট ঘড়েই পৌছে দিতে তার জুড়ি নেই।

এরকম অনেক অবদান তার রয়েছে, আর তাই ৩০ নং ওয়ার্ড বাসী এর অবদান এবং পরবর্তীতে নিজেদের ক’জন প্রতিনিধিত্ব করার জন্য নজরুলকে বেছে নিতে একতাবদ্ধ হয়েছেন। ওয়ার্ড বাসীদের মধ্য আমিনুল ইসলাম, সঞ্জু মিয়া, আবু তাহের, সুরুজ আলী এরা প্রত্যেকেই দরিদ্র মানুষ, এবং এক বাক্যে স্বীকার করলেন নজরুলের অবদান ভুলবার নয়। সে সামান্য বেতনে চাকুরী করে নিজের সংসার চালানোর পর এতবড় ত্যাগ স্বীকার করে চলছেন যা কিনা কেউ ভূলতে পারছেন না।

উপকাভোগীর রিকশাচালক রহমান জানান, গত ঈদে কাজ কাম ছিল না, রিক্সা নষ্ট ছিল, কিভাবে ঈদ করবো। চিন্তায় অস্থির ছিলাম, ছেলে-মেয়েদের মুখের দিকে তাকানো ছিল দুস্কর, ঠিক সেই মুহুর্তে নজরুল এসে হাজির। চিরাচরিত নিয়মে এসে কিছু কাপড়, চাল, মাংশ, ও নগদ অর্থ দিয়ে গেলেন--আজও সেই স্মৃতি মনে পড়লে- চোখ বেয়ে পানি এসে যায়। নজরুল আমাদের অভিভাবক, আমরা ওয়ার্ড বাসী নজরুল্ কে চাই।

এ ব্যাপারে নজরুল কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি হাসিমুখে বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে বড় হয়েছি। এ দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা করি, তাই ছোট চাকুরী করেও সাধ্যমত এলাকার মানুষের খোঁজখবর রাখি। তেমন কিছু করতে পারি না, তবে এলাকার মানুষ আমাকে স্নেহ করে ভালবাসে। আমি তাদের ভালবাসায় মুগ্ধ।

(এনআরকে/এসপি/ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩)