শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে অতিরিক্ত ১২০০ টাকা ঘুষ না দিয়ে কেউ নিতে পারছেনা পাসপোর্ট। ঘুষ দিতে না পারলে নানান ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে গ্রাহকদের। পাসপোর্ট অফিসের কর্মচারী-কর্মকর্তা ও এক শ্রেণীর দালালের কারসাজির কারণে এ রকম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের মাধ্যমে মেশিন রিডবল পাসপোর্ট করানোর কাজ শুরু হয়েছে গত ১৮ জুন থেকে । শুরু থেকেই পাসপোর্ট অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং চিহ্নিত কিছু দালাল পাসপোর্ট করতে আগ্রহী নাগরিকদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে প্রতিটি পাসপোর্টের বিপরিতে ১ হাজার থেকে শুরু করে ১ হাজার ২ শত টাকা পর্যন্ত অরিক্তি ফি আদায় করছে। পাসপোর্ট আবেদনকারীরা জানিয়েছেন ১ মাসের মধ্যে স্বাভাবিক পাসপোর্ট করার জন্য ব্যাংকে ৩ হাজার ১ শত টাকা জমা দিতে হয় এবং ১৫ দিন মেয়াদের মধ্যে জরুরী ভিত্তিতে পাসপোর্ট করার জন্য ব্যাংকে জমা দিতে হয় ৬ হাজার টাকা। এর পরেও নানা ধরনের অযুহাত দেখিয়ে এবং হয়রানী করে অফিসের কর্মকর্তারা অতিরিক্ত ফি না দিলে কাউকেই পাসপোর্ট দিচ্ছে না।

দালালচক্র এবং কর্মচারি-কর্মকর্তাদের পাশাপাশি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে স্থানীয় সম্পদ তহবিল বা এল আর ফান্ডেও নেয়া হচ্ছে প্রতি পাসপোর্টের বিপরীতে ১ শত করে টাকা। পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত প্রায় ৫ মাসে শরীয়তপুর আঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমে সাড়ে ১০ হাজার মেশিন রিডবল পাসপোর্ট করানো হেয়ছে। এ হিসেব অনুযায়ী এল আর ফান্ড গ্রাহকদের থেকে নিয়েছে ১০ লক্ষ টাকারও অধিক এবং ১ কোটি টাকারও বেশী টাকা ঘুষ নিয়েছে দালাল-কর্মচারীরা।

পাসপোর্ট গ্রাহক মো. জাকির হোসেন, মনিরুল ইসলাম, মোকসেদ মিয়া ও মো. সাইদুর রহমান বলেন, বিভিন্ন ধরনের ভুলভ্রান্তি ও কাটা ছেড়ার অযুহাত তুলে কর্মকর্তারা পাসপোর্টের ফরম ফেরত দিয়ে দেয়। ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২ শত টাকা ঘুষ দিলেই সব ঠিকঠাক করে পাসপোর্ট দিচ্ছে তারা। এর পরেও সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দিতে গেলে সেখানে রিসিটের মাধ্যমে ডিসি অফিসে এল আর ফান্ডের নামে নিচ্ছে একশত টাকা। এর আগে গোপালগঞ্জ জেলা থেকে শরীয়তপুরের নাগরিকরা মেশিন রিডবল পাসপোর্ট করতো। সেখানে কোন ঘুষ লাগতো না। এখন নিজের বাড়ির কাছে ঘুষ দিয়ে পাসপোর্ট করার চেয়ে কষ্টের আর কি থাকতে পারে।

শরীয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মো. মেহেদী হাসান বলেন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নীচ তলাতে আমরা পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছি। আমার অফিসের কোন লোক গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেনা। দালাল প্রতিরোধ করা জন্য আমরা অচিরেই ভ্রাম্যমাণ আদালদেতর সাহায্য নেব।

স্থানীয় সম্পদ তহবিলে টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক রাম চন্দ্র দাস বলেন, সব জেলাতেই পাসপোর্ট করা থেকে এর আর ফান্ডে কমবেশী টাকা আদায় করা হয়। আমরা অনিয়মিতভাবে কিছু টাকা নিচ্ছে। এটা সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচিতে ব্যয় করা হয়।

(কেএনআই/এএস/নভেম্বর ১০, ২০১৪)