রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : দুই হাজার টাকা ঘুষের জন্য জমির খারিজ (নামজারি) না করার অপরাধে শৌলমারী ইউনিয়নের তহসিলদার (ইউনিয়ন ভূমিসহকারী কর্মকর্তা) রুহুল্লা আমিনকে পিটুনি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হারুন-অর রশীদ নামের এক কৃষক ও তার লোকজন উপজেলার মাঠের ভিটা নামক স্থানে তহসিলদারের পথরোধ করে ওই মারপিটের ঘটনা ঘটায়।

খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত তহসিলদারকে হাসপাতালে ভর্তি করায়। সোমবার দুপুরের দিকে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ঘটনা এটি। এব্যাপারে ওই কৃষক তহসিলদারের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগও দায়ের করেছে।

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ওই তহসিলদার তার পরিষদে যাওয়ার পথে হারুন-অর রশীদের সঙ্গে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে দু’জনের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় হারুন-অর রশীদের পক্ষের লোক এসে ওই তহসিলদারের ওপর চড়াও হয় এবং মারপিট করে। অভিযোগ আছে এলাকার মানুষের জমির নামজারি করতে দলিল প্রতি ২থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ অসংখ্য মানুষের। এলাকাবাসি অভিযোগ করেছেন ঘুষ ছাড়া কোনো জমির নামজারি করে না ওই কর্মকর্তা।

উপজেলার মন্ডলপাড়া গ্রামের আব্দুল বাতেন এর পুত্র হারুন-অর রশীদ (৩৫) অভিযোগ করে বলেন, ‘৩ মাসে আগে আমার নামীয় ১৪ শতাংশ জমি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে খারিজ করার জন্য সকল কাগজপত্র জমা দেই। কিন্তু তহসিলদার রুহুল্লা আমিন তা খারিজ না করে আমার কাছে দুই হাজার টাকা ঘুষ চায়। আমি ওই ঘুষের টাকা না দেওয়ার কারনে আমার জমি খারিজ করে না। অফিসে গেলে কয় আজ না কাইল আসেন। আবার কয় দুই হাজার টাকা আনছেন। আমি বলি টাকা নিলে রশিদ দিতে হবে। এভাবে তিন মাস থেকে আমাকে হয়রানি করছে। ওই দিন মাঠের ভিটা নামক স্থানে দেখা হলে জমির খারিজ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। আর এ কারনে কিছু মারপিট হয়েছে।’ দুই হাজার টাকা ঘুষ চেয়েছে তার প্রমাণ-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুই হাজার টাকা চেয়ে আমার মোবাইল ফোনে ক্ষুদে বার্তা (এসএমএস) দিয়েছে।’

তবে অভিযুক্ত তহসিলদার রুহুল্লা আমিন ঘুষ গ্রহণের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘ওই ব্যক্তির জামির কাগজপত্র কম থাকায় নামজারি করা সম্ভব হয়নি। তাকে একাধিকবার বলা হয়েছে জমির কাগজপত্রে ক্রুটি আছে। কিন্তু তিনি তা না মেনে রাস্তায় পথ আটকে আমাকে মারপিট করেছে। পুলিশ না আসলে তারা আমাকে মেরেই ফেরত।’

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘বিষয়টির তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ শামীম হাসান সরদার জানান, ঘটনার দিন সন্ধা ৬টা পর্যন্ত কোনো পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি।

(আরআইএস/এএস/নভেম্বর ১০, ২০১৪)