স্টাফ রিপোর্টার : ফরিদপুরের এমপি নিক্সন চৌধুরীর স্ত্রী মুনতারিন মুজিব চৌধুরী (৩৩) গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যাওয়ার পর থেকেই মৃত্যু নিয়ে রহস্য আরও বেড়েছে। কেউ বলছে হৃদরোগে মৃত্যু আর হাসপাতাল সূত্র বলছে, ছাদ থেকে পড়ে ইনজুরিতে মৃত্যু।

সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা খন্দকার জাহিদুর রহমান গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, চারতলার বেলকনি থেকে পা পিছলে পড়ে গিয়েছিলেন মুনতারিন চৌধুরী। এরপর হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তিনি মারা যান। তিনি বলেন, স্ত্রীর মৃত্যুর পরে নিক্সন চৌধুরীও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে।

মুনতারিনের মৃত্যুর খবরে গুলশানে নিক্সন চৌধুরীর বাড়িতে এসেছেন তার নির্বাচনী এলাকার নেতা-কর্মীরা। তারা সাংবাদিকদের জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সংসদ সদস্যের স্ত্রী মারা গেছেন বলে শুনে তারা এসেছেন।

ইউনাইটেড হাসপাতালের কর্মকর্তা (ডিউটি ম্যানেজার) মোহাম্মদ মিনহাজ সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার রাত ৮টা ৩৮ মিনিটে মুনতারিনকে হাসপাতালে আনা হয়। ছাদ থেকে পড়ে ইনজুরি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। পরে আইসিইউতে রাখা হয়, সেখানে রাত ৯টা ৫১ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। পুলিশের অনুমতি ছাড়া লাশ হস্তান্তর করা হবে না বলেও জানান তিনি।

নিক্সন চৌধুরী স্ত্রী ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে গুলশান ২-এর ৭৬ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়ির চতুর্থ তলায় থাকেন। ঘটনার সময় তিনি বাসায় ছিলেন বলে জানান তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা।

এই মৃত্যুর বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার লুত্ফুল কবীর সাংবাদিকদের জানান, রাত ১০টার পরে হাসপাতাল থেকে নিক্সন চৌধুরীর স্ত্রীর মৃত্যুর খবর আমাদের কাছে আসে। কী কারণে তিনি মারা গেছেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা আমাদের বলেনি। অপমৃত্যুর শিকার মুনতারিনের লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে কি-না, সেই সিদ্ধান্ত নেয়নি পুলিশ। তিনি বলেন, কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি। তাই এ মুহূর্তে কিছু বলতে পারছি না। তবে মৃতের স্বজনরা এলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।

নিক্সন চৌধুরির পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, গুলশানের আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে মুনতারিনকে দাফনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। নিক্সন চৌধুরীর সহকারী একান্ত সচিব মো. কাওসার হোসেন জানান, মুনতারিন চৌধুরীর এগার বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। সে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়াশোনা করে। নিক্সন চৌধুরী ও মুনতারিনের দাম্পত্য জীবন ১৮ বছরের। অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় মুনতারিনকে বিয়ে করেন নিক্সন চৌধুরী।

মুনতারিনের মরদেহ রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। বিদেশ থেকে মৃতের স্বজনরা দেশে আসার পরই দাফনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। লাশের পোস্টমর্টেম হবে কি-না সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন মৃতের স্বজনরা।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নূর-ই আলম চৌধুরীর (লিটন চৌধুরী) ভাই নিক্সন চৌধুরী দশম সংসদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন ফরিদপুর-৪ আসনে। সেখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহকে বিপুল ভোটে হারিয়ে বিজয়ী হন তিনি। পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন মাদারীপুরের এই বাসিন্দা। নিক্সন চৌধুরী সর্ম্পকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাতিজা।

(ওএস/এটি/মে ০১, ২০১৪)