সাভার প্রতিনিধি : ঢাকা-১৯ আসনে হেভিওয়েট দুই প্রার্থীর সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে জয়লাভ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। এ আসনে তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা: এনাম ও সাবেক সংসদ সদস্য মুরাদ জং। সকল সমীকরণ পাল্টে দিয়ে বিজয় নিশ্চিত করায় আনন্দে আত্মহারা হয়েছেন তার সমর্থক ও অনুসারীরা। কেউ করেছেন বিজয় মিছিল কেউবা এলাকায় বিতরণ করেছেন মিষ্টি। 

সোমবার (০৮ জানুয়ারি) রাতে সাভার উপজেলার আশুলিয়ার দূর্গাপুর এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছেন স্থানীয় সমর্থকরা। পরে বিজয় মিছিলের আয়োজন করা হয়।

স্থানীয়রা বলছেন, রানা প্লাজার ঘটনায় বহুল আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য মুরাদ জং এই আসন থেকে ঈগল মার্কায় স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। আর নৌকা মার্কা নিয়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন ডা: এনাম। এই দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর চাপে সাইফুল ইসলাম ছিলেন অনেকটাই কোনঠাসা। কারণ দুজনেই একাধিক বার সংসদ সদস্য নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। আর তাদের বিপরীতে সাইফুল ইসলাম একেবারেই তরুণ। তিনি শুধুমাত্র একটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার উদ্দেশ্যে চেয়ারম্যান পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি। তাই অনেকেই ভেবে নিয়েছিলেন হেভিওয়েট দুই প্রার্থীর সাথে টেক্কা দিয়ে হয়তো জিততে পারবেন না তিনি। সাইফুল ইসলামের সমর্থক ও কর্মীরাও ছিলেন অনেকটাই চাপে। তাই ফলাফল ঘোষণার পর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন তিনি।

সাইফুল ইসলামের সমর্থক স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. সজল বলেন, তিনি যখন ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন, তখন দেখিয়ে দিয়েছেন উন্নয়ন কাকে বলে। ধামসোনার উন্নয়ন সারাদেশের সামনে রোল মডেল। আমরা বিশ্বাস করেছি, তিনি জিতলে পুরো সাভার-আশুলিয়া জুড়েই এমন উন্নয়ন করবেন। সে কারণেই তাকে ভোট দিয়েছি, অন্যদেরও উৎসাহিত করেছি। এছাড়া নির্বাচনে সাভারে খুব হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। আমরা খুব চিন্তায় ছিলাম, তিনি বাকি দুইজন হেভিওয়েট প্রার্থীর সাথে টেক্কা দিয়ে জিততে পারবেন কিনা! অন্য প্রার্থীর সমর্থকেরা কতজনে কত কথা বলেছে, আমরা শুধু আল্লাহকে ডেকেছি। যখন ফলাফল পেলাম, খুব খুশি হয়েছি৷ তাই আমার পক্ষ থেকে এলাকায় মিষ্টি খাইয়েছি সবাইকে।

শুধু সজল একাই নন, সাভারের বিভিন্ন স্থানে সাইফুল ইসলামের সমর্থকগোষ্ঠী করেছেন রঙ মাখামাখি, গেয়েছেন বিজয়ের গান। আনন্দমুখর পরিবেশে সবাই মেতেছেন বিজয়ের উৎসবে।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-১৯ আসনে মোট ৮৪ হাজার ৪১২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ট্রাক মার্কার এই স্বতন্ত্র প্রার্থী। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মুরাদ জং পেয়েছেন ৭৬ হাজার ২০২ ভোট। আর নৌকা প্রতীক নিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী পেয়েছেন ৫৬ হাজার ৩৬১ ভোট। এই আসনে ভোটার সংখ্যা ৭ লাখ ৫৬ হাজার ৪১৬ জন আর এবারে মোট ভোট সংগ্রহ হয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৬৫০টি।

উল্লেখ্য, গত ৮ নভেম্বর দেশের জনবহুল ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাছে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছিলেন তিনি। নৌকা না পেয়ে স্বতন্ত্র ভাবে ট্রাক মার্কায় নির্বাচনে অংশ নেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন।

(এস/এসপি/জানুয়ারি ০৯, ২০২৪)