ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : চলমান শীতের তীব্রতার সাথে সাথে ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন থাকছে আকাশ। ঈশ্বরদীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রী থেকে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রিতে সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। বুধবার (১০ জানুয়ারী) আবহওয়া অফিস ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রী রেকর্ড করেছে। ঘন কুয়াশার কারণে এরইমধ্যে বোরোধানের বীজতলার চারাগুলো গাঢ় সবুজ থেকে ক্রমেই কুঁকড়ে হলুদাভ হয়ে পড়ছে। কৃষি বিভাগ বলছে, ১৮ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা প্রবাহিত হলে বোরোসহ অন্যান্য ফসলের বীজতলাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ অবস্থা বিরাজমান থাকলে বোরো ধানের চারা তুলে জমিতে রোপন করার মতো অবস্থায় থাকবেনা বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। এতে বোরো আবাদ ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে বলে কৃষকরা আশঙ্কা করছেন।

জানা গেছে, ডিসেম্বরের ২০ তারিখের পর হতে তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রীতে নেমে আসে। মাঝে মাঝে ১৪-১৫ ডিগ্রীতে ওঠলেও ১৮ ডিগ্রীর নীচেই রয়েছে। সাথে রয়েছে ঘন কুয়াশা। ফলে বোরো ধানের কচি বীজতলার চারাগুলো গাঢ় সবুজ থেকে কুঁকড়ে হলুদাভ হয়ে পড়ছে। কৃষি অফিস জানায়, এবারে ঈশ্বরদীতে ৪৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের বীজতলায় ধানের চারা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ঘন কুয়াশা ও নিম্নগামী তাপমাত্রার কারনে এখনও অনেক বীজতলা প্রস্তুত করা সম্ভব হয়নি। যেটুকু হয়েছে তার বেশীরভাগই শৈত্যপ্রবাহের কারনে ক্ষতির মুখে পড়েছে। যত্ন নিয়েও ধানের চারা হলুদাভ বর্ণ থেকে রক্ষা করা যাচ্ছে না। বীজতলা ঢেকে রাখার পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন কুয়াশা ঝেড়ে ফেলা ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষি বিভাগ থেকে।

শীতের তীব্রতা ও ঘন কুয়াশার কারণে বোরো ধানের বীজতলার পাশাপাশি জনজীবন ও গবাদি পশু নিয়েও কৃষক দুর্ভোগে পড়েছেন। সাঁড়া ইউনিয়নের মাজদিয়া এলাকার কৃষক আব্দুল হালিম জানান, চারা রোপন করার যোগ্য হয়ে ওঠার আগেই বীজতলা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। কুয়াশার প্রভাব থেকে কোনভাবেই প্রতিরোধ যাচ্ছেনা। সলিমপুরের কৃষক আব্দুল বারী জানান, বোরো ধানের চারা রোপনের জন্য জমি প্রস্তুত করেও চারা ওঠাতে না পারায় চাষাবাদ বিলম্বিত হচ্ছে। শীতের প্রকোপ না কমলে বীজতলা থেকে চারা ওঠানো এবং জমিতে রোপন করা যাচ্ছে না।

উপজেলা কৃষি অফিসার মিতা সরকার জানান, আঠার ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা প্রবাহিত হলে বীজতলা ক্ষতির সম্মুখিন হওয়ার আশংকা থাকে। ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা ১০.৫ থেকে ১২.৮ ডিগ্রিতে ওঠা নামা করছে। এ অবস্থায় লক্ষ্যমাত্রার ৪৩ হেক্টর জমির মধ্যে মাত্র ২১ হেক্টর জমিতে বীজতলায় বোরো ধানের চারা প্রস্তুত হয়েছে। অবশিষ্ঠ জমিতে এখনো চারা দেওয়া সম্ভব হয়নি। কুয়াশা থেকে রক্ষা করতে বীজতলা ঢেকে রাখা, প্রতিদিন সকালে চারায় জমে থাকা কুয়াশা ঝেড়ে ফেলা ও নিয়ম করে সেচ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বীজতলার চারা সবুজ রাখতে সালফার জাতীয় ছত্রাক নাশক প্রয়োগ এবং রাতে সাদা পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে কৃষি কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১০, ২০২৪)