সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বাগেরহাটে তিনদিন ধরে হাড় কাঁপানো কনকনে শীতে বিপাকে পড়েছে জেলা খেটে খাওয়া মানুষ। শীতের তীব্রতার মধ্যে আবার বইছে উত্তরের বাতাস। দিনে মেঘলা আকাশে ক্ষণে ক্ষণে নিরুত্তাপ সূর্যের দেখা মিললেও তাতে কমছেনা শীতের তীব্রতা। এই অবস্থায় উপকূলীয় এই জেলার নদী বেষ্টিত জনপদ ও চরাঞ্চলসহ খেটে খাওয়া মানুষের দৈনন্দিন জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। থমকে দাড়িয়েছে জনজীবনে। হাসপাতালে বৃদ্ধ ও শিশুসহ শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। দরিদ্র মানুষের শীত নিবারণে পর্যাপ্ত বস্ত্র না থাকায় তারা আগুন জ্বেলে শরীর গরমের চেষ্টা করছেন।

বাগেরহাটের বলেশ্বর, পানগুছি, ভৈরব, দড়াটানা, পশুরসহ নদ-নদীর পাড়ের জনপদে বসবাসকারী লোকজন শীতের তীব্রতার মধ্যে উত্তরের হাড় কাঁপানো কনকনে শীতল বাতাসে তাদের জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। এসব এলাকার কৃষক, মাঝিমাল্লা ও জেলেরা তীব্র শীতে স্বাভাবিক কাজ কর্ম করতে পারছেনা।

শরণখোলার বগি গ্রামের ভ্যানচালক ইদ্রিস জানান, তিনদিন ধরে প্রচন্ড শীত পড়েছে। শীতবস্ত্রের অভাব থাকলেও পেটের দায়ে ভ্যন নিয়ে বের হলেও যাত্রী পাচ্ছিনা। আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। এরকম কয়েকদিন চলতে থাকলে না খেয়ে থাকতে হবে।

কৃষক ছলেমান ফরাজী জানান, ঠান্ডা বাস্ত ও কাঁপানো কনকনে শীতে মাঠে কাজ করতে পারছি না। গবাদি পশু নিয়েও বিপাকে পড়েছি। মোংলার মামারঘাটে যাত্রীর অপেক্ষায় থাকা নৌযান শ্রমিক বাদল ও মোশারেফ জানান, শীতে নদীতে নৗযান চালাতে খুব কষ্ট হয়, তারপর আবার বাতাসও হচ্ছে। যাত্রী নেই তাই নদীর পাড়ে আগুন জ্বেলে শরীর গরম করছি।

একই এলাকার জরিনা বেগম জানান, আমি মানুষের বাড়িতে কাজ করি, শীতে গরম কাপড় কেনার সামর্থ্য, এখনো কোনো কম্বলও পাইনি। শীতে খুব কষ্ট পাচ্ছি, তাই সকাল-সন্ধ্যা আগুন পোহাচ্ছি।

মোংলা উপজেলা হাসপাতারের মেডিকেল অফিসার ডা. প্রকাশ কুমার দাশ জানান, প্রচন্ড শীতে ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিই হচ্ছেন ৭০ থেকে ৮০ জন শিশু হাসপাতালে আসছে। এদর মধ্যে ১০ থেকে ১৫ শিশুকে ভর্তি করা হচ্ছে। এখন প্রতিদিনই শ্বাসকষ্টে নিয়ে ৪০ থেকে ৫০জন বৃদ্ধ নারী-পুরুষ হাসপাতালে আসছেন।

(এসএসএ/এএস/জানুয়ারি ১৩, ২০২৪)