মাগুরা প্রতিনিধি : শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও বিশিষ্ট সমাজসেবক ভাষা সৈনিক খান জিয়াউল হকের দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকী ১৪ জানুয়ারি রবিবার। এ উপলক্ষে পারিবারিকভাবে দোয়া মাহফিল ও এতিমখানায় দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়েছে।

ভাষা সৈনিক খান জিয়াউল হক ১৯২৭ সালের ৬ জুন মাগুরার ভায়না গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার চাকরি সূত্রে শৈশবকাল কেটেছে বিভিন্ন জায়গায়। পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ থেকে প্রাথমিক পর্যায়ের লেখাপড়া শেষ করে যশোর জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, কলকাতা রিপন কলেজে এবং যশোর এমএম কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক ও বিএ পড়েছেন।

যশোর এমএম কলেজে পড়াকালে পর্যায়ক্রমে ছাত্র সংসদের জিএস ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন খান জিয়াউল হক। এ সময় তিনি ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৫২ সালে যশোর এমএম কলেজে ব্যাপক পুলিশি হামলার পর মাগুরায় চলে আসেন এবং ভাষা আন্দোলনে অন্যতম সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্রহত্যার প্রতিবাদে মাগুরায় মিছিল বের হয় এবং মিছিল থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।

খান জিয়াউল হক শিক্ষাজীবন শেষে শহীদ বুদ্ধিজীবী সিরাজ উদ্দীন হোসেনের সাহচর্যে ঢাকায় কিছুদিন সাংবাদিকতা করেন। পরে মাগুরা মডেল হাইস্কুলে যোগ দিয়ে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। এরপর ১৯৬২ সালে মাগুরা এজি একাডেমি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন। দীর্ঘ ৪৪ বছর সফলভাবে দায়িত্ব পালন শেষে সেখান থেকে তিনি অবসর গ্রহন নেন। মাগুরার বিভিন্ন শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অগ্রযাত্রায় ভাষা সৈনিক খান জিয়াউল হকের অবদান চির স্মরণীয়।

ভাষা সৈনিক খান জিয়াউল হক বিভিন্ন পদক ও সন্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। তার মধ্যে সমাজ সেবা পুরস্কার, মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক বাংলাদেশ স্কাউটসের সর্বোচ্চ সম্মান রৌপ ব্যাঘ্র, নরেন বিশ্বাস পুরস্কার, গোলাম মুস্তাফা পদক, আব্দুল হক স্বর্ণপদক, হরিশ দত্ত নাট্য পদক, থিয়েটার ইউনিট নাট্য পদক, শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষকের পুরস্কারসহ অসংখ্য পদক ও পুরস্কার।

(এমএফ/এএস/জানুয়ারি ১৪, ২০২৪)