শাহ আলম শাহী, দিনাজপুর : হস্তশিল্পের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানে স্বাবলম্বী হচ্ছে উত্তরের সীমান্ত ঘেষা জেলা দিনাজপুরের নারীরা।অসচ্ছল নারীদের কর্মসংস্থানের  সুযোগ করে দেওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে  জেলার খানসামা উপজেলায় গড়ে তোলা 'রংজুট বিডি' নামে একটি প্রতিষ্ঠান। তৈরী হচ্ছে  অপরূপ কারুকার্য সম্মিলিত দৃষ্টিনন্দন হস্তশিল্প পণ্য। দেশের গন্ডি পেরিয়ে যা বিশ্ব বাজারেও চাহিদা গড়ে তুলেছে।

বিভিন্ন স্থান থেকে উপকরণ সংগ্রহ করে তৈরি হচ্ছে এ হস্তশিল্প। মান ভালো ও দৃষ্টিনন্দন হওয়ায় ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে নারীদের হাতে তৈরিকৃত এসব পণ্যের। হস্তশিল্পের এসব পণ্য মুগ্ধ করেছে, দেশি-বিদেশি ক্রেতাদেরও।

নারীরা নিপুন হাতে তৈরি করছেন হোগলা বাস্কেট, রাক্স, ফ্লোর ম্যাট, পাপশ, ডোর ম্যাট সহ বিভিন্ন ধরনের হস্তেশিল্প পণ্য। এ প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন ৫০ জনেরও বেশি মানুষ। যার অধিকাংশই নারী।

এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গ্রামের সাধারণ নারীদের তৈরি করা পণ্য চলে যাচ্ছে বিশ্ববাজারেও। এতে স্বাবলম্বী হচ্ছেন অনেক নারী। এমনটাই জানালেন
রংজুট বিডি এর প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার কাইদুজ্জামান।

তিনি বলেন, যদি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া যায়,তাহলে আরো এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে অসংখ্য মানুষের। তৈরিকৃত পণ্যের মাধ্যমে নারীরাও এগিয়ে যাবে বিশ্বের দরবারে।কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বেকারত্ব দূর হবে অনেকের।

বাসুলি এলাকায় গড়ে ওঠা 'রংজুট বিডি' নামে একটি প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে খানসামা উপজেলার যুব কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, 'যে কোন প্রতিষ্ঠান এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব যদি উদ্যোক্তার মনোবল স্বচ্ছ ও উদ্যমযুক্ত থাকে। এই প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। অনেক নারী এখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন। তারা স্বাবলম্বী হচ্ছেন। আমরা যথাযথ সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি।'

সরজমিনে গিয়ে কথা হয় এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বেশ কয়েকজনের সাথে। খানসামা উপজেলার ১ নং আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের বাসিন্দা শান্তিবালা জানালেন, 'আগে অভাব আছোলো। সংসারে কষ্ট ছিলো। গত ৩ মাস ধরে এখানে কাজ করি,অভাব দূর হইচ্ছে।।ভাগ্য খুলিছে, এখন পেট ভরে খাইতে পারছি বাড়ির সকলে।'

কর্মসংস্থানে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠা এ প্রতিঠানে কর্মে ব্যস্ত থাকা চল্লিশোর্ধ বয়সের আরেক নারী মোসলেমা জানালেন,'স্যার এখন ভালোই আছি। কাম পাইছি, খাবার পাছি। আর কেহো আঙ্গুল তুলি খারাপ কিছু কহিবা পারেনা। এখন সম্মান হয়ছে।'

(এসএএস/এএস/জানুয়ারি ১৬, ২০২৪)