ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : ঈশ্বরদীর বিভিন্ন গ্রামে বেড়েই চলেছে গরু চুরির ঘটনা। সপ্তাহের ব্যবধানে ৯ গরু চুরি হয়েছে । পিকআপ ও মাইক্রোবাস ব্যবহার করে খুব সহজেই চোর চক্র করছে গরু চুরি। জীবিকার অবলম্বন গবাদি পশু হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে দরিদ্র কৃষক।

সম্প্রতি পুলিশের অভিযানে পাবনা জেলায় গরুসহ আন্তজেলা চোরদলের একাধিক ব্যক্তি আটক হলেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে মূলহোতারা। যেকারণে থামছে না চুরি। আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছে গরুর মালিকরা।

ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া ইউনিয়নের বয়রা গ্রামের কৃষক আশরাফুল আলম চেতন জানান, রবিবার দিবাগত রাতে (১৪ জানুয়ারি) তার গোয়ালঘর থেকে রাত আনুমানিক ৩ টার দিকে ২টি গরু চুরি হয়েছে। এর ১টি গাভী ও ১টি ষাঁড়। গরু দুটির মূল্য প্রায় দুই লাখ টাকা। চুরির ঘটনায় ঈশ্বরদী থানায় করা হয়েছে জিডি। সুলতানপুর গ্রামের আব্দুল বাতেন বিপুলের ১৩ জানুয়ারি রাতে গোয়ালঘরের তালা কেটে একটি গাভী চুরি করে নিয়ে গেছে সংঘবদ্ধ চোর দল।

তিনি জানান, চুরির কাজে পিকআপ ও চোরদের সাপোর্ট দেওয়ার জন্য সাদা রঙের হাইচ (মাইক্রোবাস) ব্যবহার করে। চুরির বিষয়ে ঈশ্বরদী থানায় একটি জিডি করা হয়েছে।

আটঘরিয়ার পাড়াশিধাই গ্রামের দরিদ্র কৃষক আজাহার আলী জানান , ১৩ তারিখ রাতে গোয়াল ঘর থেকে ৩টি গাভী করে চুরি করে নিয়ে যায় চোরদল। চোরদের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের রুখতে চেষ্টা করি। কিন্তু তাদের কাছে ধারালো অস্ত্র (রাম দা, চাপাতি, ছুরি) থাকায় আমরা তাদের ধাওয়া করেও আটকাতে পারিনি। এখন সর্বহারা হয়ে গেছি।

বয়রা গ্রামের আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, চুরি করা গরু পাচারের জন্য পিকআপ ও মাইক্রোবাস ব্যবহার করে থাকে চোর চক্রের সদস্যরা। গবাদি পশু চুরির কারণে অতিষ্ঠ এলাকার বাসিন্দারা।

মাজদিয়া ইলশামারি গ্রামে গত ১০ জানুয়ারি রাতে শহিদ মন্ডলের দুটি বলদ ও একটি গাভী এবং মাজদিয়া পশ্চিম খাঁ পাড়ার সাইফুলের বাড়ীতে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা চুরি করেছে সংঘবদ্ধ চোরের দল।

দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বকুল সরদার বলেন, চুরির বিষয়টি আমি শুনেছি। বয়রা- সুলতানপুর থেকে এবং পার্শ্ববর্তী পাড়াশিধাই গ্রাম থেকে দুই দিনের ব্যবধানে ৬টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। আমি এলাকাবাসীকে প্রতিটি গ্রামে রাতে ব্যক্তিগত উদ্দ্যোগে পাহারার এবং ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করার জন্য বলেছি । এর ফলে চুরি ঘটনা কমবে বলে আশা করি।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, গবাদি পশু মালিকদের অসচেতনতার কারণে সুযোগ পাচ্ছে চোরেরা। গোয়াল ঘর অরক্ষিত দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। আমরা চোরদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। পুলিশি টহলের ব্যবস্থার সাথে সাথে প্রতিটি গ্রামে রাতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে পাহারার ব্যবস্থা করলে চুরির ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।

(এসকেকে/এএস/জানুয়ারি ১৭, ২০২৪)