শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্য প্রনাহে কনকনে শীতে কাঁপছে  উত্তরের জনপদ দিনাজপুর। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি ) দেশের সর্বোনিন্ম তাপমাত্রা  ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে এ জেলায় । যা মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

৯ দিন ধরে বৃষ্টির মতো ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জীবন-যাত্রা।পশু-পাখিসহ প্রাণিকুলেরও অবস্থাও নাকাল। শীতের প্রকোপে খেটে খাওয়া-নিন্ম আয়ের মানুষের বেহালদশা।

রাভভর বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন,আজ বুধবার (১৮ জানুয়ারি ) দেশের সর্বোনিন্ম তাপমাত্রা দিনাজপুরে রেকর্ড করা হয়েছে, ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ জেলায় যা মৌসুমের সর্বোনিন্ম তাপমাত্রা।বাতাসের আদ্রতা ৯৪ শতাংশ আর গতি ০১ নটস।তাপমাত্রা কয়েকদিন নিম্নমুখী থাকবে। বৃষ্টিরও আশংকা রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

কনকনে শীতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ছন্দপতন ঘটছে। সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে ছিন্নমুল ও খেটে খাওয়া মানুষ। খেটে খাওয়া হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষদের বেহালদশা। আয়-ঊপার্জন না থাকায় চরম দুর্ভোগে পৌছেছে তাদের জীবনযাত্রা।

এদিকে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির কারণে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। গত কয়েকদিন ধরে তীব্র শীতের কারনে শিশু ও বয়োবৃদ্ধারা নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ শীত জনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।হাসপাতালগুলোতে রোগি সামলা হিমসিম খাচ্ছেন,নার্স এবং চিকিৎসকরা।

দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জন এএইচএম বোরহানুল ইসলাম সিদ্দিকী জানিয়েছেন, 'তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতজনিত রোগ আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এ জন্য শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডা থেকে দূরে রাখাসহ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে শিশু ও বয়স্কদের বের না হওয়াই ভালো।'

দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা.মো.হাবিবুর রহমান বলছেন,এই সময়ে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যাগুলোই বেশি দেখা যায়। যেমন কাশি, অ্যাজমার প্রকোপ বেড়ে যাওয়া, সাময়িক জ্বর, কোল্ড অ্যালার্জি হয়ে থাকে। এ সময় বাতাসে ধুলাবালি বেশি থাকায় অনেকে অ্যালার্জি বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা দেখা যায়।

বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষদের কাশি, কোল্ড অ্যালার্জির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঠিক সময়ে সনাক্ত করা না গেলে সেটা অনেক সময় নিউমোনিয়াতেও রূপ নিতে পারে।তাই এই সময়ে অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে হবে।প্রয়োজন ছাড়া বয়স্ক এবং শিশুদের বাইরে নেয়া যাবেনা। উষ্ণতায় রাখতে হবে। '

শিশুদের যাতে শীত না লাগে ব্যোপারে সাবধানতা অবলম্বনের জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

শহর থেকে একটু দূরে গ্রামে থাকা ছিন্নমূল, অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধদের অবস্থা নাকাল।

হতদরিদ্র-ছিন্নমূল মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে অনেকেই খড়-কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছেন।ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তার অদূরে কিছুই দেখা যায় না।তাই, দূর্ঘনা এড়াতে সড়ক,মহা-সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল করছে হেড লাইট জ্বালিয়ে। এরপরও বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা।

অন্যদিকে শীতের কারণে জেলা শহরের হকার্স মার্কেট এবং অভিজাত বিপণিবিতান থেকে শুরু করে ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে বাড়ছে শীতার্ত মানুষের ভিড়।

(এসএএস/এএস/জানুয়ারি ১৮, ২০২৪)