স্টাফ রিপোর্টার : সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, আইনজীবী সমিতিতে আগে এরকম সরাসরি দলাদলি খুব একটা ছিল না। আমার মনে হচ্ছে ধীরে ধীরে সমিতির যে ঐতিহ্য তা ক্ষয়িষ্ণু করে ফেলছি। বিচার বিভাগকে ছোট করে কখনো গণতান্ত্রীক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা সম্ভব না। এটি আমাদের প্রত্যেককে মনে রাখতে হবে। আগে দ্বীমত থাকলেও বারের নেতৃত্বের ক্ষেত্রে সবাইকে নিয়ে চলা, সবার প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ছিল।

আইনজীবী মোহাম্মদ ওজায়ের ফারুকের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে আয়োজিত স্মরণ সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

ওজায়ের ফারুকের ছেলে ব্যারিস্টার এম. ইমতিয়াজ ফারুক এবং তার চেম্বারের জুনিয়র আইনজীবীরা এ আয়োজন করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বারের সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।

বারের সাবেক সম্পাদক নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, বারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা আইনজীবীদের বাড়িতে বাড়িতে ঘুরতাম। এখন মনে হয় ওপর দিক থেকে কেউ চাপিয়ে দিচ্ছে, আর আমরা ভোট করতেছি। ওপর থেকে চাপিয়ে দিলাম আর নেতা হলাম–এ নেতৃত্ব দিয়ে বার কখনো শক্তিশালী হবে না। আশা করবো, আগামী দিনে আইনজীবীরাই তাদের নেতা তৈরি করবেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি বোরহান উদ্দিন। তিনি বলেন, ওজায়ের ফারুক অনুপ্রেরণার আরেক নাম। বারের সভাপতির কাছে আবেদন জানাবো যারা কৃতি আইনজীবী আছেন তাদের স্মরণে যেন প্রত্যেক মাসে এরকম স্মরণ সভা করা হয়। যাতে জুনিয়ররা জানতে পারে কেন তিনি প্রথিতযশা।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, সবার সঙ্গে ওজায়ের ফারুকের সম্পর্ক ছিল। তিনি মানুষকে প্রচণ্ড খাওয়াতে পছন্দ করতেন। মানুষকে ভালোবাসা।

সাবেক প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় প্রচণ্ড অবক্ষয়ের স্রোত নেমেছে। যেখানে নৈতিকতা এবং মূল্যবোধ হারিয়ে যাচ্ছে। ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ, সমাজসেবক ও গুনি মানুষের সংখ্যা প্রায় কমে আসছে। এমন সময়ে ওজায়ের ফারুককে স্মরণ করার মধ্যদিয়ে উপলব্ধি করতে চাই– তারা যে বৈশিষ্টের ছিলেন আমাদের জীবনে যদি লালন করতে পারি তাহলে তাকে স্মরণ করা যথার্থ হবে।

সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমাজ অনেক কষ্টে আছি। আমাদের নেতা আছে অনেক, নেতৃত্বের অভাব। সবকিছু হারিয়ে ফেলছি আমরা। আইনজীবী হিসেবে যেভাবে কথা বলা উচিৎ, যেভাবে ভূমিকা রাখা উচিৎ সেটা ভুলে যাচ্ছি। বার চালানোর বিষয়ে যে ভূমিকা রাখা উচিৎ মনে হয় সেটা পারছি না। এ অবস্থায় ওয়াজের ফারুকের মতো একজন নেতৃত্ব দরকার ছিল।

স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মাসুদ হোসেন দোলন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউর রহমান, বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। সাবেক বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস কে মোরশেদ প্রমুখ।

(ওএস/এএস/জানুয়ারি ৩০, ২০২৪)