রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর থেকে : ফরিদপুরে রিতা আক্তার (২৫) নামে তালাকপ্রাপ্ত এক স্ত্রীকে হত্যার দায়ে তার সাবেক স্বামী মো. আলমগীর হোসেন (২৮)কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে আসামীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত আসামী আলমগীর হোসেনের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।

জানা যায়, আসামী আলমগীর কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার খড়িবনা গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১০ ডিসেম্বর ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার বিশ্বাস ডাঙ্গী গ্রামের কালাম মোল্যার মেয়ে রিতা আক্তারের সাথে আলমগীর হোসেনের পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিবাহের পর তাদের ঘর আলো করে একটি পুত্র সন্তান জন্ম হয়। এর কিছুদিন পর পারিবারিক কলহের জেরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর ২০১৮ সালের ১৫ মার্চ রিতা আক্তার সদরপুর উপজেলার আলী আহম্মেদের ছেলে শাহজালালকে পুনরায় বিবাহ করেন। বিবাহের পর থেকে রিতা আক্তার তার ছেলে রাহুল (৪) ও দ্বিতীয় স্বামী শাহজালালকে সাথে নিয়ে চরভদ্রাসন উপজেলার বি এস ডাঙ্গী এলাকায় ভাড়া বাসায় তারা মোটামুটি সুখেই বসবাস করতে থাকেন।

কিন্তু ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় রিতা আক্তার ছেলে রাহুলকে নিয়ে চরভদ্রাসন বাজারে যায়। বাজারে গিয়ে রিতার সাবেক স্বামী আলমগীরের সাথে দেখা হয়ে যায়। আলমগীর রিতাকে পুনরায় তার সাথে সংসার করতে বলে। কিন্তু এতে রিতা আক্তার রাজী না হলে ক্ষিপ্ত হয় প্রথম স্বামী আলমগীর। তার কিছুক্ষণের মধ্যে আলমগীর হাতে থাকা চাকু দিয়ে রিতাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়।

পরে স্থানীয়রা রিতা আক্তারকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে রিতার শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে ওই রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে ভর্তি করা হয়।

ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরের দিন মৃত্যু হয় রিতা আক্তারের।

অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ ১ম আদালতের অতিরিক্ত কৌশলী (এপিপি) এডভোকেট মো. নওয়াব আলী মৃধা উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে জানান, আসামীর স্বীকারোক্তি ও দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আজ রিতা হত্যার এই রায় দেন আদালত।

(আরআই/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২৪)