রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গণি' র বিরুদ্ধে অনুশীলন খাতা দ্বিগুণ দামে ও স্লিপ ফান্ডের টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। ‘ছন্দ ছড়ায় রাসেল সোনা’ বই বিক্রি নিয়ে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার খাতা বিক্রিতে অনিয়মের ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা।

সাতক্ষীরা সদর প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, সদরের আলিপুর ক্লাস্টার ও মহাদেবনগর ক্লাস্টারের আওতায় ৫৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সুন্দর হাতের লেখা অনুশীলনের জন্য বাংলা খাতা ও ইংরেজি খাতা বিতরণের সময় অনিয়মের বিষয়টি নজরে আসে। আলিপুর ও মহাদেবনগর ক্লাস্টারের ৫৪টি স্কুলে ছাত্র প্রতি তিনটি করে খাতা কিনতে বাধ্য করা হয়।

সূত্রমতে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্লিপের প্রথম কিস্তির সমুদয় অর্থ দিয়ে এ খাতা ক্রয় করতে বাধ্য করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে খাতা বিতরণের ক্লাস্টারের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবদুল গনি জড়িত বলে অভিভাবকরা অভিযোগ করেন। তবে নেপথ্যে কাজ করে যাচ্ছেন করণিক আব্দুল ওয়াদুদ।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল গনির নির্দেশে ক্লাস্টারের সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম সাতক্ষীরা শহরের ‘ভাই ভাই প্রেসেরচ আমিনুর রহমানের নিকট থেকে ২২টাকা দরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর বাংলা খাতা ও ইংরেজি খাতা কিনে তা ৫৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট ৪৬টাকা দরে বিক্রি করছেন। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা স্লিপের টাকায় ওই কর্মকর্তাদের নিকট থেকে চড়া দামে খাতা ক্রয় করে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করেন। এতে প্রায় ১২ লক্ষাধিক টাকার খাতা বিতরণ করছেন। ১২লক্ষ টাকার মধ্যে খাতা প্রতি নজরুল ইসলাম রেখেছেন ১০ টাকা এবং শিক্ষা অফিসার আব্দুল গনি রেখেছেন ৫টাকা কমিশন। এভাবে তারা দুটি ক্লাস্টারে ২৮ হাজারের অধিক খাতা বিতরণ করেছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের আওতাধীন শিক্ষকরা মুখে ছিপি লাগিয়ে রেখেছেন। মুখ খুললেই তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষা অফিসের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে-এমন ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না। ইতোপূর্বে ‘ছন্দ ছড়ায় রাসেল সোনা’ বই বিক্রিতেও একই ধরণের অভিযোগ ওঠে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে। এরপর গাছকাটার অভিযোগ ওঠে। বিভিন্ন স্কুলের প্রাচির নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। সম্প্র আব্দুল গণি এটিও রবিউল ইসলাম ও এক প্রভাবশালী প্রধান শিক্ষকের চেষ্টায় সাবেক এমপি মীর মোস্তাক আহম্মেদ রবি' র ডিও লেটারের মাধ্যমে বদলী হলেও ওই এমপিকে দিয়ে পাল্টা ডিও লেটার লিখিয়ে নিয়ে আবারো সাতক্ষীরা সদরে ফিরে আসেন।

ওই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় অভিভাবকরা রীতিমত হতাশ। তবে সদর প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গণি ইতিপূর্বে বারবার তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন,একটি মহল তার ভালো দেখতে না পেরে মিথ্যাচার করছে।

(আরকে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২৪)