স্বপন কুমার কুন্ডু, ঈশ্বরদী : ঈশ্বরদীতে বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইন্সস্টিটিউটের ক্যাম্পাসে গড়ে তোলা হয়েছে গাঁদাসহ বাহারি সব ফুলের বাগান। যেদিকে তাকানো যায় সেদিকেই বিচিত্র ও বর্ণাঢ্য ফুলের সমারোহ। বাহারি এসব ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমীরা। এমনকি রাজশাহী, পাবনাসহ দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন ফুলপ্রেমীরা।

ঋতু পরিক্রমায় শীত বিরাজমান। মাঘের কনকনে শীতের সাদা ও ঘন কুয়াশা আর বাতাসের শনশন শব্দ, প্রকৃতি ছেয়ে আছে প্রচন্ড শুষ্কতা আর রুক্ষতায়। কুয়াশার চাদরে আবৃত হয়ে আছে ঈশ্বরদী। তীব্র শীতে মানুষ এখনো জড়সড়। এরইসাথে পাল্লা দিয়ে বাহারি রঙের নতুন ফুলে ফুলে সেজেছে সুগারক্রপের ক্যাম্পাস। যেদিকে তাকানো যায় সেদিকেই বিচিত্র সব ফুলের সমারোহ। ফুলের গন্ধে মাতোয়ারা পুরো ক্যাম্পাস, যা অনন্য এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। প্রাকৃতিক শোভা যেন হাত বাড়িয়ে টেনে আনছে সবাইকে।

বিএসআরআই-এর মূল ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই ‘কালজয়ী মুজিব’ ম্যুরালের সামনে দেখা যাবে রং-বেরঙের নানা ফুল। আরেকটু সামনে এগোতেই গেষ্টহাউস ঘিরে রয়েছে বাগানে দৃষ্টিনন্দন ফুলের। প্রশাসনিক ভবনের সামনে গাদা, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, চামেলি ও টগরসহ নানা ফুল। ট্রেনিং সেন্টারসহ আশেপাশে যেদিকে তাকানো যায় সেদিকেই বিচিত্র ও বর্ণাঢ্য ফুলের সমারোহ। ক্যাম্পাস ঘুরে আরও দেখা গেছে, বিভিন্ন জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন সব ফুলের বাগান।

এই প্রতিষ্ঠানে সকল ঋতুতেই বিশেষ করে শীত ও বসন্তে বাহারি ফুলের বাগান করার রেওয়াজ দীর্ঘদিনের। তবে বিগত এক দশকে দৃষ্টিনন্দন মৌসুমী ফুলের বাগান তৈরীতে ভাটা পড়ে। প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী ও কর্মচারীরা জানান, নতুন ডিজি সাহেব আসার পর থেকে প্রতিষ্ঠানে বৈচিত্র আনার প্রচেষ্টা চলছে। এরইমধ্যে তৈরী হয়েছে মুজিব কর্ণার। পুরাতন আমলের সবকিছু ঝেড়ে ফেলে সাজানো হচ্ছে অফিস।


প্রতিদিন প্রকৃতির সুশোভিত সবুজ ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসে সব বয়সের দর্শনার্থী বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা। প্রকৃতির টানে ব্যস্ত সময়ে একটু অবসরের প্রয়োজনে বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসে এখানে। যেখানে প্রকৃতির মধ্যে যুক্ত হয়েছে এই ফুলের বাগান।

ঘুরতে আসা দিলারা জানান, ফুল দেখে মনটা হালকা হয়ে গেছে। বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন আনিসুর রহমান বলেন, প্রকৃতির এমন সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে এসেছি। ইটপাথরের শহরে এমন দৃশ্য মন ভালো করে দেয়। তাই এখানে ঘুরতে এসেছি। ফুলের সঙ্গে ছবিও তুলেছি।

কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, নানা প্রকারের গাঁদা, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, আকাশি সাদা স্নোবল, কসমস, জুঁই, চামেলি, টগর, জিনিয়া, বেলি, গোলাপ, জবা, রঙ্গন, রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে।

কথা হয় মহাপরিচালক ড. ওমর আলীর সাথে। তিনি বলেন, গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে মূলগেট থেকে শুরু করে গেস্টহাউস, পুকুরপাড়ের সৌন্দর্য্য, লেক তৈরী, অফিস ও বাংলো সুন্দর করে সাজাচ্ছি। আমি সবসময় সুন্দরের পূজারী। বিএসআরআই-এর আনাচে-কানাচে ফুলগাছ লাগিয়ে সৌন্দর্য্যবর্ধন করেছি। যা শুধু প্রতিষ্ঠানের লোকই নয়, স্থানীয় মানুষ এমনকি পাবনা-রাজশাহী থেকেও লোকজন দেখতে আসছেন। আমি থাকবো না, কিন্তু এসব সৌন্দর্য্য মানুষের মনে চিরস্থায়ী হয়ে গেঁথে থাকবে।

(এসকেকে/এএস/ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৪)