মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আহ্বায়ক ও জেলা নাট্য পরিষদ (জেনাপ) সভাপতি নাট্যকার কবি আব্দুল মতিনের দায়ের করা মামলায় বিবাদী কয়েছ চৌধুরীকে ১ বছরের কারাদণ্ড ও চেকে উল্লেখ করা টাকার দ্বিগুণ পরিশোধ করার নির্দেশনা দিয়ে রায় প্রদান করেছেন মৌলভীবাজারের ২য় যুগ্ম জজ আদালতের বিচারক মোঃ জিয়াদুর রহমান।

চলতি মাসের ১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন বলে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার বাদী আব্দুল মতিন ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবি এড. ময়নুর রহমান মগনু। কয়েছ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে চেক ডিজঅনার এর মামলাটি করেছিলেন বাদী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আব্দুল মতিন।

এর আগে ওই মামলাকে কেন্দ্র করে গত মাসের ২৮ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শহরের সাইফুর রহমান সড়কের ওয়েস্টার্ন প্লাজার সামনে আগে থেকে ওৎপেতে থাকা কয়েছ চৌধুরীর নেতৃত্বে কয়েক যুবক কবি ও নাট্যকার আব্দুল মতিন এর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ ও লাঞ্চিত করে। এ ঘটনায় শহর জুড়ে তোলপার সৃষ্টি হয়। নিন্দার ঝর উঠে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অঙ্গনের নানা মহল থেকে। সুষ্টু তদন্ত ,বিচার ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পরদিন শহরের চৌমোহনা চত্বরে জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই প্রতিবাদ সভা থেকে কয়েছ চৌধুরী সহ জড়িতদের গ্রেফতারের দাবীও জানানো হয়।

এ বিষয়ে আব্দুল মতিন বলেন, আমার সাথে তাঁর আক্রোশ হলো সে আমাকে ৬ লক্ষ টাকার চেক দিছে। কিন্তু এখন সে আমার পাওনা টাকা দিচ্ছেনা। তার পর আমি প্রথমে উকিল নোটিশ পাঠাই। তাও কাজ না হওয়াতে আমি আমার আইনজীবীর মাধ্যমে চেক ডিজঅনার এর মামলা করি। আসামী কয়েছ চৌধুরী জানতে পারে চলতি মাসের ১ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ ৫ বছর পর ওই মামলার রায় হতে যাচ্ছে। এবং মামলার রায় আমার পক্ষে থাকবে এমন ধারণা থেকে সে রায় এর ৩ দিন আগে দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে আমার উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এসময় গাড়ীর নীচে ধাক্কা মেরে প্রাণে মেরে ফেলার জন্য চেষ্টা করেছিলো। তিনি বলেন, মামলাকে কেন্দ্র করে কয়েছ চৌধুরী নানা কুট-কৌশল সহ আমাকে ব্লাকমেইল করার চেষ্টা করে।

আদালতের রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আব্দুল মতিন আরও বলেন, মহান আদালতের কাছে আমি সুবিচার পেয়েছি। এখন আসামীকে আইনের আওতায় সাজা প্রদান করার মাধ্যমে আশাকরি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। তিনি বলেন, কয়েছের মূল খুটি এক প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা। তিনি সরকারী গাড়ীতে তাকে নিয়ে চলাফেরা করে বিভিন্ন অপরাধ করে থাকেন। ওই জনপ্রতিনিধির মাধ্যমেই সে এখন আইনের ধরাছুঁয়ার বাহিরে আছেন।

মামলার রায়ের বিষয়ে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আইনজীবি ময়নুর রহমান মগনুর সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মনে করি এই রায়টি একটি ঐতিহাসিক রায়, ২০১৯ সালে আামার বাদী আব্দুল মতিন চেক ডিজঅনার এর ওই মামলাটি দায়ের করেছিলেন। ১ ফেব্রুয়ারি মৌলভীবাজারের ২য় যুগ্ম জজ আদালত রায় প্রকাশ করেছেন। আমরা আইনী লাড়াইয়ে সুবিচার পেয়েছি। বিবাদী বিভিন্ন সময় আমার বাদীকে হুমকি দেন। রায়কে কেন্দ্র করে হামলাও চালায়, আমরা তার বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনে অভিযোগ দিয়েছি। তবে তিনি জানান রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন না কয়েছ চৌধুরী।

(একে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৪)