স্পোর্টস ডেস্ক : ঝড়ের শুরুটা করেছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। শততম টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা এই ওপেনারের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে পাহড়সম সংগ্রহ পায় অস্ট্রেলিয়া।  তবে জবাবে উইন্ডিজও কম যায়নি। রানের পাহাড় গড়েছে তারাও। তবে অল্পের জন্য হার মানতে হলো ক্যারিবীয়দের। সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আজ ১১ রানে জয় তুলে নিয়েছে অজিরা। হোবার্টে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২১৩ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা। জবাবে দারুণ শুরু পর মাঝে খেই হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা। শেষদিকে চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ২০২ রান তুলতে পারে তারা।

অজি ওপেনার ওয়ার্নারের সামনে আজ অপেক্ষা করছিল দারুণ এক মাইলফলক- ইতিহাসের প্রথম ব্যাটার হিসেবে তিন ফরম্যাটেই শততম ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানোর। এর আগে ওয়ানডে ও টেস্টে নিজের শততম ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন তিনি। এবার সুযোগ ছিল টি-টোয়েন্টিতে কীর্তি গড়ার। তবে সেঞ্চুরি না পেলেও হাঁকিয়েছেন ফিফটি। এমন কীর্তিও এর আগে কারও নেই।

তবে একটি রেকর্ডে ঠিকই নাম লিখিয়েছেন ওয়ার্নার। ক্রিকেট তিন সংস্করণেই ১০০ বা তার বেশি ম্যাচ খেলার নজির আছে কেবল রস টেলর ও বিরাট কোহলির। এবার অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে সেই বিরল ক্লাবে যোগ দিলেন ওয়ার্নার। টেস্ট ও ওয়ানডেতে ১০০টি ম্যাচ খেলার মাইলফলক আগেই স্পর্শ করেছেন তিনি।

তবে শততম ম্যাচে আজ ঠিকই সব আলো কেড়ে নিয়েছেন ওয়ার্নার। আগে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়াকে দারুণ শুরু এনে দেন তিনি। আরেক ওপেনার জশ ইংলিসের সঙ্গে ৯৩ রানের জুটি গড়েন। ২৫ বলে ৩৯ রান করে ইংলিস বিদায় নিলেও ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন ওয়ার্নার। মাত্র ২২ বলে ফিফটি তুলে নেওয়ার পর ছুটছিলেন সেঞ্চুরির দিকেই। কিন্তু উইন্ডিজের পেসার আলজারি জোসেফ জোড়া শিকারে বড় ধাক্কা দেন। প্রথমে অধিনায়ক মিচেল মার্শকে (১৬) বিদায় করেন জোসেফ। এক বল পরেই ওয়ার্নারকে বিদায় করেন ক্যারিবীয় পেসার। ৩৬ বলে ১২টি চার ও এক ছক্কায় ৭০ রান করেন ওয়ার্নার।

এরপর ছোটখাটো বিপর্যয় ঘটে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপে। একে একে ফিরে যান মার্কাস স্টইনিস (৯) ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (১০)। তবে বিপর্যয় কাটিয়ে হাল ধরেন টিম ডেভিড ও ম্যাথু ওয়েড। দুজনেই ঝড় তুলতে শুরু করেন। দলকে ২০০ পার করানোর পর আন্দ্রে রাসেলের বলে উইকেট হারান ওয়েড (২১)।

পরের বলেই শন অ্যাবটকে বোল্ড করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন রাসেল। তবে অ্যাডাম জাম্পা তা হতে দেননি। আরেক প্রান্তে থাকা টিম ডেভিড শেষ পর্যন্ত ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন। মাত্র ১৭ বলের এই ইনিংসটি ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজানো।

বল হাতে ৩ উইকেট পেলেও রাসেল খরচ করেন ৪২ রান। জোসেফও অকাতরে রান বিলিয়েছেন। ৪৬ রান খরচ করে নিয়েছেন ২ উইকেট। এছাড়া জেসন হোল্ডার ও রোমারিও শেফার্ডের ঝুলিতে গেছে ১টি করে উইকেট।

জবাব দিতে নেমে দারুণ শুরু পায় উইন্ডিজও। রংপুর রাইডার্সের হয়ে এবারের বিপিএল মাতিয়ে আসা ব্র্যান্ডন কিং শুরু থেকেই ঝড় তুলতে থাকেন। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন আরেক ওপেনার জনসন চার্লস। দুজনের জুটিতে আসে ৮৯ রান। ২৫ বলে ৪২ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলে অজি লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পার বলে আউট হন চার্লস।

চার্লস বিদায় নেওয়ার পর কিং ফিফটির দেখা পান। ৩৭ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৫৩ রানের দারুণ ইনিংস খেলে মার্কাস স্টইনিসের শিকারে পরিণত হন কিং। এরপর খেই হারিয়ে ফেলে উইন্ডিজ। পরের তিন ব্যাটারই দুই অঙ্কের দেখা পেলেও কেউই ২০-এর ঘরে পা রাখতে পারেননি।

মিডল ও লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা সত্ত্বেও শেষদিকে দারুণ লড়াই উপহার দেন জেসন হোল্ডার। ৩টি চার ও ২টি বিশাল ছক্কায় মাত্র ১৫ বলে ৩৪ রান করে ক্যারিবীয়দের জয়ের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বলের সঙ্গে রানের ব্যবধান বেশি থাকায় নিজে অপরাজিত থাকলেও ম্যাচ জেতাতে পারেননি তিনি।

বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম জাম্পা ২৬ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া স্টইনিস ২টি এবং জেসন বেহরেনডর্ফ, ম্যাক্সওয়েল এবং শন অ্যাবট নিয়েছেন ১টি করে উইকেট।

ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন অজি ওপেনার ডেডিড ওয়ার্নার।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৪)