মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক দম্পতির বাসায় বেআইনি ভাবে নিয়োজিত মৌলভীবাজারের মির্তিংগা চা-বাগানের শিশু গৃহশ্রমিক প্রীতি উরাং হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে মৌলভীবাজারে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।


শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় শহরের চৌমুহনা এলাকায় সচেতন নাগরিক সমাজ এর ব্যানারে ওই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নাট্যকার আব্দুল মতিন।

সাংস্কৃতিক কর্মী ও কবি বিশ্বজিৎ দত্ত বিজিত’র সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ডেইলি স্টারের মৌলভীবাজার জেলার সাবেক প্রতিনিধি রজতকান্তি গোস্বামী, লীলা নাগ স্মৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খছরু চৌধুরী, বাসদ মৌলভীবাজার জেলা সদস্য এডভোকেট আবুল হাসান, চা শ্রমিকদের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক এস এম শুভ, উরাং ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা কমিটি সিলেট বিভাগীয় সভাপতি পুরন উরাং, সাংস্কৃতিক কর্মী কয়ছর আহমেদ, কবি পুলক কান্তি ধর, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ নন্দী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জেলা সংসদের সভাপতি তপন দেবনাথ।

বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মৌলভীবাজার জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক অজয় সেন, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র জেলা সংগঠক হৃদয় অধিকারী, উদীচী জেলা সাধারণ সম্পাদক রামেন্দ্র চন্দ্র দাস, সাংবাদিক আহমেদ আফরুজ, আব্দুর রব, সাংস্কৃতিক কর্মী রথীন্দ্র দাশ, সুবোধ দাস, সুমন দাশগুপ্ত, অসিথ দাশ প্রমুখ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সাংবাদিক ব্যক্তিবর্গ।

বক্তারা বলেন, দেশের আইনে শিশু শ্রম নিষিদ্ধ ও অপরাধ উল্লেখ থাকলেও সে আইনের প্রয়োগ যথাযথ নয়। আজ আমরা যে প্রীতি উরাং এর ঢাকার মোহাম্মদপুরের আবাসিক ভবনের নবম তলা থেকে পড়ে অস্বাভাবিক মৃত্যুর সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করছি সেই প্রীতিও শিশু গৃহশ্রমিক। দেশের আইনে শিশু শ্রমের বিরুদ্ধে শক্ত কথা থাকলেও ক্ষোভের সাথে জানাতে হচ্ছে এর প্রয়োগ দেখতে পাচ্ছি না। দেশের একটা প্রথিতযশা পত্রিকা ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদকের বাসায় একটা শিশুকে কিভাবে গৃহ শ্রমিক হিসেবে নিযুক্ত করা হলো? সেই নির্বাহী সম্পাদক দম্পতির বাসায় এর আগেও একটা শিশু ৯ তলা থেকে পড়ে আহত হয়। ৯ বছর বয়সী সেই শিশু গৃহকর্মী ফেরদৌসীর মা মামলা করলেও সেই মামলার বিচারও দেশের জনগণ দেখতে পায় নি। যার ফলস্বরূপ মৌলভীবাজার জেলার মির্তিংগা চা বাগানের প্রীতি উরাং কে একইভাবে ৯ তলা থেকে পড়ে মরতে হলো। এলাকার লোকজন বলছে মেয়েটাকে নিচে ফেলে মারা হয়েছে। নিচে পড়ার সময় প্রীতির শরীরে জামা থাকলেও পাজামা ছিলো, স্থানীয়রা ধারণা করেন মেয়েটিকে ধর্ষণ করে নিচে ফেলে দেয়া হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ প্রায়ই আশফাকুল হকের বাসা থেকে মেয়েটির চিৎকার শোনা যেত। আশফাকুল হকের নবম তলার ফ্ল্যাট থেকে পড়ে প্রীতির মৃত্যুতে কুচক্রী মহল আশফাকুল হক দম্পতির কোন যোগসাজশ নেই বলে বিষয়টিকে চালিয়ে দিচ্ছে। আমরা প্রীতি উরাং এর অস্বাভাবিক মৃত্যুর সুষ্ঠ তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত না হলে এভাবে বারবার রাজপথে দাড়িয়ে আমরা দোষীদের শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ জানিয়ে যাব। আর শিশু প্রীতিকে গৃহশ্রমিক নিয়োগ করায় আশফাকুল হক ও এর সাথে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।

(একে/এএস/ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৪)