মোঃ শাজনুস শরীফ, বরগুনা : এবার নিজের ঘর হয়েছে নুর ভানুর। প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে আর থাকতে হবে না অন্যের ঘরের বারান্দায় কিংবা গাছতলায়। বলছি বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার ৫ নং বড়বগী ইউনিয়নের ছোট ভাইজোড়া এলাকায় পরিবারে চার সদস্যের তিনজনই মানসিক প্রতিবন্ধী। এই অসহায়  নুর ভানুর থাকার জমি থাকলেও ছিলো না  মাথা গোঁজার জন্য একটি ঘর। পঁচিশ বছর ধরে নিজের একটি ঘরের জন্য ঘুরছিলেন নুর ভানু। বিষয়টি নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে সাংবাদিক নাঈম ইসলাম তার ফেসবুকে শেয়ার করলে নুর ভানুর নতুন ঘর তুলতে এগিয়ে আসেন প্রবাসী ও স্থানীরা। প্রায় ৫৩ হাজার টাকা সহায়তা দেয় প্রবাসী ও স্থানীয়রা ঘরটি তুলতে সহায়তা করে।

নুরভানুর নতুন ঘরটি তুলতে আশি হাজার টাকা খরচ হলেও বাকি ২৭ হাজার টাকা বহনকরেন দৈনিক কালবেলার তালতলী উপজেলা প্রতিনিধি নাঈম ইসলাম।

গত ১৫ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি উপজেললা মৎস কর্মকর্তা অলিউল্লাহ শুভ নুর ভানুর হাতে নতুন ঘরটির চাবি হস্তান্তর করেন। এসময় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে দোয়া মোনাজাত করা হয় মানসিক প্রতিবন্ধী নুরভানু, দৈনিক কালবেলার তালতলী উপজেলা প্রতিনিধি নাঈম ইসলামসহ সকল প্রবাসী ভাইদের জন্য।

দৈনিক কালবেলার তালতলী উপজেলা প্রতিনিধি নাঈম ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন আগে নুরভানু ও তার পরিবারের জন্য কিছু একটা চেষ্টা করে আসছিলাম। নুরভানুর কষ্টের কথা কালবেলায় তুলে ধরেছিলাম। সংবাদটি দেখে প্রবাসী ও স্থানীয় অনেকে সহযোগিতায় ও আমার অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ নুর ভানুর জন্য একটি ঘর তুলে দিতে পেরেছি।

উপজেলা মৎস কর্মকর্তা অলিউল্লাহ শুভ বলেন, নুর ভানুর ঘর উদ্বোধনে এসে নিজের কাছেও ভালো লাগছে। সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এ প্রতিনিধি।

নতুন ঘর তুলে দিতে যারা সহযোগিতা করেছেন এবং দৈনিক কালবেলার প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন নুর ভানু।

উল্লেখ্য, নুরভানুর চারজনের সংসারে তিন জনই মানসিক প্রতিবন্ধী। দুই প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে অন্যের ঘরের বারান্দায় প্রায় পনেরো বছর যাবৎ দিনাতিপাত করে আসছিলেন নুরভানু। নুরভানু ও তার দুই সন্তানকে ছেড়ে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে কলাপাড়ায় সংসার পেতেছেন নুরভানুর স্বামী জামাল হোসেন। নিতেন না স্ত্রী সন্তানদের খবর। অন্যের ঘরে ঝি এর কাজ করে সন্তানদের নিয়ে মানবের জীবন যাপন করতেন নুরভানু।

(এসএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৪)